সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিনের ঠিক আগেই এক্স হ্যান্ডেলে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ ট্যুইট করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। তার আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার এহেন পোস্ট নিঃসন্দেহেই তাৎপর্যপূর্ণ, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই। অবশ্য এই প্রথম নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরী হিসাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা এর আগেও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন কুণাল ঘোষ। সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়েও সেই একই বার্তা দিয়েছেন।
এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল লিখেছেন, “রাত পোহালেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। খুব ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, চোখের সমস্যাটা একদম ঠিক হয়ে যাক। কম বয়সেই যোগ্য নেতৃত্বের যে ছাপ অভিষেক রাখছে, সময়ের সঙ্গে তা আরও ব্যাপকতর হতে থাকুক। আমি নিজে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, এই উদীয়মান তারকার উপর গুরুত্বসহ নজর রাখবই। বয়সে ছোট, কিন্তু যতদিন আমি তৃণমূলে সক্রিয় থাকব, ও আমার নেতা। তার বাইরে স্নেহ করি, ভালোবাসি।”
কুণালের সংযোজন, “মমতাদিকে দীর্ঘকাল দেখেছি, এখন অভিষেককেও দেখছি। দ্রুত আরও পরিণত। আবেগের সঙ্গে মিশছে আধুনিক পদ্ধতি, প্রযুক্তি। আরও ধারালো হচ্ছে অভিষেক। সময়ের নিয়মে মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে অভিষেক, তৃণমূল কংগ্রেসের সেনাপতি থেকে যুগান্তরের পতাকায় কান্ডারী। মমতাদির ঘরানার সময়োপযোগী ধারক ও বাহক। মমতাদির নেতৃত্ব চলতে থাকুক, আর তার মধ্যেই আগামীর পদধ্বনি হতে থাকুক বাংলার রাজনৈতিক সামাজিক চালচিত্রে।”
প্রসঙ্গত, এর আগে ১৭ অগাস্ট আরজি কর কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সক্রিয় ভাবে সামনে চেয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছিলেন, বিরোধীদের চক্রান্ত ভাঙতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সক্রিয়ভাবে সামনে প্রয়োজন।
তিনি লিখেছিলেন, আরজি কর: আমরাও প্রতিবাদী। দোষী/দোষীদের ফাঁসি চাই। কিন্তু তৃণমূল ও বাংলার বিরুদ্ধে শকুনের রাজনীতি করছে বামরাম। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব রুখতে লড়াইতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সক্রিয় ভাবে সামনে চাই। আমাদের কিছু ভুল শুধরে সঠিক পদক্ষেপে সব চক্রান্ত ভাঙতে হবে।
কিছুদিন আগেই কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনাওয়াজ মণ্ডল অভিষেককে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সম্বোধন করেন। বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে বিধায়কের এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধে। এছাড়াও মাঝেমধ্যে একাধিক তৃণমূল নেতার মুখে একথা শোনা গিয়েছে। যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের রাজনৈতিক উত্তরসূরী হিসাবে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আলাদা করে কুণাল ঘোষকে বারবার একথা উল্লেখ করে বলতে হচ্ছে কেন? তাহলে কি দলের মধ্যেই এই নিয়ে কারোর মনে কোনও ধন্দ রয়েছে? তৃণমূলে আদি ও নব্য নেতাদের মধ্যে যে সমান্তরাল একটি সমীকরণ রয়েছে, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে অজানা নয়। এই নিয়ে যদিও কোনও তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “আর বেশি তেল দিলে অভিষেক পা হড়কে পড়ে যাবেন। এ বড় বিদূষক! তৈলমর্দন করেই জীবন বাঁচে। ২৬-এর পর হতে পারলে হয়ে দেখাক!”