মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মহিলাদের অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করতে চালু করেছেন ‘ লক্ষীর ভান্ডার ‘ প্রকল্প । এবার সেই লক্ষীর ভান্ডার নামে ক্লাব গড়ে ফেললেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সনকাডাঙা গ্রামের মহিলারা। ওই
গ্রামের মহিলাদের যে কোনো সমস্যা থেকে মহিলাদের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানো , গ্রামের উন্নয়ন মূলক কাজ , বাল্য বিবাহ রোধ হোক বা গরিব মেয়ের বিয়ে সবেতেই মুশকিল আসান এর ভূমিকায় লক্ষীর ভান্ডার ক্লাব।
এতে খুশি গ্রামের সকল মহিলারা। তাঁদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পুরুষরাও । কাঁসাই নদীর পাড়ে ৭৬ টি পরিবারের বাস সনকাডাঙা গ্রামে। কৃষক , শ্রমিক পরিবারের পাশাপাশি স্কুল শিক্ষক রয়েছেন। গ্রামের সকল গৃহবধূ লক্ষীর ভান্ডার এর টাকা পান।
গৃহবধূ বানী গোয়ালা ও রিতা তেওয়ারি জানান , দেড় বছর আগে থেকেই তাঁরা এই প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন। প্ৰতি মাসে ১ হাজার টাকা পান। সেই টাকা সংসার চালাতে , নিজেদের হাত খরচে কাজে লাগছে। কয়েক মাস আগে থেকেই তাঁরা কয়েকজন মিলে ঠিক করেন মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তাঁদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরাও ঠিক করেন নিজেরাই একটি ক্লাব গড়ে তুলবেন যাঁর নাম দেবেন ‘লক্ষীর ভান্ডার ক্লাব। ‘
নিজেরা প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট চাঁদা দেন। সপ্তাহে একদিন তাঁরা আলোচনায় বসেন। এখনো নিজস্ব ক্লাব ঘর নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তাই কখনো স্থানীয় পঞ্চায়েত কার্যালয়ের বারান্দায় , কখনো অঙ্গনওয়াড়ি বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় তাঁদের সভার কাজ চলে। কি কি নিয়ে আলোচনা হয় ? মালতি দাস জানালেন , গ্রামের নলকূপ দরকার , ঢালাই রাস্তা দরকার , পথ বাতি দরকার, পুকুর সংস্কার করতে হবে এসব আলোচনা হয়। এছাড়াও সদস্যারা বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন । যেমন নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে তাঁর বাড়ির লোকজন বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তা রুখতে হবে। স্বামী – স্ত্রীর বচসা হচ্ছে। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁদের ছেলে মেয়েরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। তখন তাঁরা হস্তক্ষেপ করেন। দুপক্ষকে নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁদের বুঝিয়ে আবার ভাঙা সংসার জুড়ে দেওয়া হয়।
গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রাজেন গোয়ালা জানান , মহিলাদের এই উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন। খুবই ভালো উদ্যোগ। গ্রামের মহিলারা গ্রামের উন্নয়ন মূলক কাজে এগিয়ে আসলে আরো বেশি উন্নয়ন হবে। কারো কোনো প্রকল্পের সুবিধা পেতে সমস্যা হচ্ছে , বাল্য বিবাহ , সাংসারিক অশান্তি এসব খবর তাঁদের কাছে আগেই আসছে। তিনি জানান , প্রস্তাব এসেছে আগামী দিনে তাঁদের যাতে একটি ক্লাব ঘর নির্মাণ করা হয় সেবিষয়ে তিনি প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন।