শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
বাংলা থেকে একের পর এক জঙ্গির গ্রেফতারি। মঙ্গলবার এনিয়ে শাসকদল তৃণমূলকে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী। তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
রাজ্য বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রাজ্যে মুসলিম লিগ ২-এর সরকার চলছে। ইন্দোরে সেক্স ব়্যাকেট, দিল্লিতে হনুমান জয়ন্তীতে হামলা, সম্প্রতি ৮ জন জঙ্গি গ্রেফতার, সব ঘটনাতেই বাংলার যোগ রয়েছে। বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ে ও কামালগাজি মোড় থেকে ক্যানিং হয়ে যে রাস্তা গোসাবা গিয়েছে, তা জঙ্গিদের দখলে চলে গিয়েছে। মমতার ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য এটা হয়েছে।”
ক্যানিংয়ে কাশ্মীরি জঙ্গি জাভেদ মুন্সির গ্রেফতারি উদ্বেগ বাড়িয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে শুভেন্দু এদিন বলেন, “গোসাবাতে ১৩টি দ্বীপ আছে। একটা দ্বীপে বিএসএফের ক্যাম্প রয়েছে। বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ে থেকে সায়েন্স সিটি হয়ে ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে জঙ্গিরা। বারুইপুরে ২০২২ সালে ২ জঙ্গি ধরা পড়েছিল। হিন্দু নাম নিয়ে ১৭টা আধার কার্ড বানিয়েছিল।” বাংলা জঙ্গিদের মুক্তাঞ্চল হয়ে গিয়েছে বলে দাবি শুভেন্দুর।
এরপরই রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনকে আক্রমণ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এখানকার পুলিশ, টাকা তুলতে আর তৃণমূলের হয়ে ভোট লুঠ করতে ব্যস্ত। আর যদি নামের সঙ্গে লাল্টু শেখ বা আব্দুল মান্নানদের ছোঁয়া থাকে তাহলে গ্রেফতার করা তো দূরের কথা মাথায় হেলমেটও লাগবে না। এখানে মুসলিম লিগ টু সরকার চলছে। এই জঙ্গিবাদ, মৌলবাদকে বাঁচিয়ে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারা ভোট লুঠ করে তৃণমূলে ভোটে জেতায়। তৃণমূলের মিটিং মিছিলে গাড়ি ভাড়া করতে হয় না। গত মাসে কলকাতায় প্রকাশ্যে মাদ্রাসার ছোট ছোট বাচ্চাদের মধ্যে বিষ ঢুকিয়েছেন সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। গোটা ভারতবর্ষটাকে নষ্ট করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁর সরকারের আসল মুখ সিদ্দিকুল্লাহ, ফিরহাদ, জাভেদ খান, আরাবুল, শওকত, জাহাঙ্গির। এই মডেল পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাচ্ছে।”
মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মিশে বাংলায় জঙ্গি ঢুকছে বলে দাবি শুভেন্দুর। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় জঙ্গিদের ভুয়ো ভোটার ও আধার কার্ড বানানো নিয়ে তিনি বলেন, “ভোটার লিস্টে নাম তুলেছিল জঙ্গি। ভোটার লিস্টে যে বিডিও নাম তুলেছে তাকে ধরা উচিত। পশ্চিমবঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের লোভে যারা বলছেন ধর্ম যার যার, তাদের ভাবা উচিত।” পুলিশকে আক্রমণ শানিয়ে শুভেন্দু বলেন, “রাজ্যের পুলিশকে এমন প্যানিক করে রাখা হয়েছে যে তারা নির্দিষ্ট কমিউনিটির বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবে না। একটি বিশেষ জনগোষ্ঠী মমতাকে ২ কোটি ভোট দিয়েছে। তাদের হেলমেটও লাগে না।”
অন্যদিকে, এদিন আরজি কর মামলায় কেন্দ্রীয় ফরেনসিক রিপোর্ট নিয়েও প্রতিক্রিয়া দেন শুভেন্দু। ওই রিপোর্টে আরজি করের অপরাধস্থল নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও বিরাট ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে দাবি করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি পরিবারের সঙ্গে একমত। সংগঠিত চক্রান্তের বলি হয়েছে আমাদের এই বোন। ৫ দিন ধরে প্রমাণ লোপাটের কাজ হয়েছে। মমতার নির্দেশে অতীন ঘোষের নেতৃত্বে প্রমাণ লোপাট হয়েছে। সব প্রমাণ লোপাট করেছেন বিনীত গোয়েল।”