প্রিয়াঙ্কা মান্না। কলকাতা সারাদিন।
স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি ছাড়া প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা নিষিদ্ধ হলো সরকারি ডাক্তারদের। এবার থেকে কোন সরকারি হাসপাতাল অথবা সরকারি ভাতা প্রাপ্ত ডাক্তাররা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে চাইলে স্বাস্থ্য ভবনের থেকে নিতে হবে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জারি করল নির্দেশিকা।
প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে জাস্টিসের নামে মাসের পর মাস সরকারি সমস্ত হাসপাতালে কর্ম বিরতি ঘোষণা করে রাজ্যের অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অধীনে চিকিৎসা এবং অপারেশন করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে ছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা।
ইতিমধ্যেই কর্মবিরতির মধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে চিকিৎসা করে টাকা আয় করা জুনিয়র ডাক্তারদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য হাতে এসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার নবান্ন থেকে এবং বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন থেকে জানিয়েছেন, আর জি কর মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে এই বিষয়ে রাজ্য সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এবার সরকারি ডাক্তারদের হাসপাতালে ডিউটি ফাঁকি দিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের পাশাপাশি প্রাইভেট চেম্বার খুলে রোগী দেখার উপরে বিধি-নিষেধ চালু করল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নিয়ম অনুসারে কোন সরকারি চিকিৎসক সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত থাকাকালীন বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম অথবা প্রাইভেট চেম্বার খুলে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করলে তা বেআইনি হিসেবে গণ্য হয়। কারণ সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তারদের সরকার নন প্রাক্টিসিং এলাউন্স বা বিশেষ ভাতা দিয়ে থাকে।
তবে ব্যতিক্রমীক্ষেত্রে কোন ডাক্তার যদি এই নন প্রেক্টিসিং এলাউন্স না নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছ থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেন তাহলে তাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার অনুমতি পান। বাংলাতেও এবারে কেন্দ্রীয় এই আইন কঠোর ভাবে বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। তার প্রেক্ষিতেই আজ স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
কি রয়েছে নির্দেশিকায়
স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কোনও অধ্যাপক চিকিত্সক যদি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে চান, তাহলে ডিরেক্টর অফ হেল্থ এডুকেশনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট লাগবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবনের জারি করা এই নির্দেশিকার সঙ্গে সরকারি ডাক্তার অধ্যাপকদের জন্য একটি ফরম প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে রীতিমতো হলফনামা দিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারী ডাক্তারদের জানাতে হবে তিনি সরকারি হাসপাতালে কাজের পাশাপাশি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে চান এবং তার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে যে নন প্রাক্টিসিং এলাউন্স পান তা আর নেবেন না। শুধু তাই নয়, সরকারি হাসপাতালের কোয়ার্টারে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা যাবে না।
এমনকি নিজের কর্ম ক্ষেত্রে থেকে কুড়ি কিলোমিটার এর বাইরে তিনি কোথাও প্রাইভেট প্র্যাকটিস করবেন না এবং কোন জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রাইভেট প্র্যাকটিস ছেড়ে সরকারি কর্ম ক্ষেত্রে যোগ দিতে বাধ্যথাকবেন।