এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যেসব প্রার্থীর নাম “অযোগ্য” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক চলছিল। আদালত জানিয়েছে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসরণ করে পরিচালিত হবে এবং সেই অনুযায়ী অযোগ্যদের বাদ দিয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
চিহ্নিত অযোগ্যদের জন্য বড় শাস্তি
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য এক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, যেসব প্রার্থীরা ইতিমধ্যে “অযোগ্য” হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন, তারা এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। বিচারপতি জানান, যদি কোনো অযোগ্য প্রার্থী ইতিমধ্যে আবেদন করে থাকেন, তাহলে তাদের আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল যে, সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেছে না যে, চিহ্নিত অযোগ্যরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। তবে আদালত জানিয়ে দেয়, এই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগের পরেও এই ধরনের দাবি করা একেবারে অগ্রহণযোগ্য।
মামলার পটভূমি: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। এই সিদ্ধান্তে বলা হয়, যেসব প্রার্থীরা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন এবং যাদের নিয়োগে দুর্নীতি ছিল, তাদের ১২ শতাংশ সুদসহ বেতন ফেরত দিতে হবে।
এছাড়া, ২০২৪ সালের ২৪ এপ্রিল রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ ৩ এপ্রিল দুর্নীতির দায়ে চিহ্নিত অযোগ্যদের দৃষ্টিতে রেখে বলেন, এই দুর্নীতির মাশুল কেবল অযোগ্যদেরই নয়, যোগ্যদেরও গুনতে হবে।
নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অযোগ্যদের স্থান নেই
এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াটি চিহ্নিত অযোগ্যদের ছাড়াই সম্পন্ন করতে হবে। আদালত জানিয়েছে, যদি অযোগ্য প্রার্থী কোনওভাবে নতুন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চান, তাদের আবেদন বাতিল করতে হবে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে দাবি করেছিলেন যে, অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য বয়সজনিত ছাড় দেওয়া হবে, তবে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার কোনও বাধা নেই।
তবে, আদালতের সোজা মন্তব্য ছিল যে, দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে হবে এবং সমস্ত প্রক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে করা হবে।
এখন কী হবে?
এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে। আদালতের এই নির্দেশের পর, যেসব প্রার্থী আগের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চিহ্নিত অযোগ্য হিসেবে গণ্য হয়েছেন, তাদের জন্য এক নতুন বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি যারা ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদের জন্যও নতুন প্রক্রিয়ায় আবেদন করা কঠিন হবে।
এসএসসি-র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য একদিকে যেমন প্রস্তুতি চলছে, তেমনি এই মামলার পরবর্তী আপডেটের দিকে নজর রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।