সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আরজি কর হাসপাতালে যে সেমিনার হল নিয়ে চর্চা, সেখানে ঘটনার পরেই প্রচুর লোকের ভিড়। ৪৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে। দাবি করা হয়, যে স্থানে খুন-ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে এত লোক এল কী করে? এখানে কী কোনও প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা হচ্ছে? এই অভিযোগ নস্যাৎ করে ‘ক্রাইম সিন’-এ কোনও প্রমাণ নষ্ট হয়নি, ক্রাইম সিন ‘সুরক্ষিত’ ছিল বলেই জানাল কলকাতা পুলিশ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলার যে সেমিনার হলের ভেতরে চিকিৎসকের সঙ্গে নারকীয় ঘটনা ঘটেছিল, সেখানে অর্থাৎ ক্রাইম সিন-এ বেশ কিছু লোককে ভিড় করে থাকতে দেখা যায় ওই ভিডিয়োতে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের তৎকালীন আপ্তসহায়ক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপের আইনজীবী শান্তনু দে, হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিনের শিক্ষক দেবাশিস সোম সহ আরও বেশ কয়েকজনকে দেখা যায়। এরপরেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে।
এর জবাবে কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ঘটনার পরেই পুলিশের যেখানে মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল, সেই জায়গাটি ‘কর্ডন’ (ঘটনাস্থলে প্রবেশ নিষেধ করে ঘিরে দেওয়া হয়) করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যেখানে দেহ পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকে ৪০ ফুটের মধ্যে কেউ আসেননি। পিও কর্ডন করে দেওয়া হয়।’
তিনি জানান, সেমিনার হলের ওই ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে ১১ ফুটের একটি জায়গায় চিকিৎসক, মৃত চিকিৎসকের পরিবারের লোকজন সহ হাসপাতালের কিছু লোকজন ছিলেন। সেখানে কোনও বহিরাগত ছিলেন না। সেখানে চিকিৎকদের সঙ্গে পরিবারের লোকজনের বেশ কিছু আলোচনার জন্য জায়গাটিতে বসার ব্যবস্থা করা হয়। এই জায়গার সঙ্গে পিও (প্লেস অব অকারেন্স)-এর কোনও সম্পর্ক নেই।
গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি করে জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। সেইদিনের একটি ভিডিয়ো নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয় সোমবার। দেহ উদ্ধারের পর সেই জায়গা সিল করে দেওয়া হয়নি বলে সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দাবি করা হচ্ছিল। সেমিনার হলে কোনও লোকের ঢোকা, বের হাওয়া নিয়ে পুলিশের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না বলে দাবি কর হয় বিভিন্ন মহলে। সেই দাবি এদিন পুলিশের তরফে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়।
লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, ‘সেমিনার হলের একটা অংশে মৃতদেহ ছিল। মৃতদেহ উদ্ধারের জায়গা থেকে ৪০ ফুট জায়গা ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। সেমিনার হলে বহিরাগত কেউ ছিল না। ৪০ ফুটের বাইরে ১১ ফুট এলাকায় অনেক মানুষ ছিলেন। ৪০ ফুট পর্যন্ত কর্ডন করা ছিল। কর্ডন এলাকায় নির্দিষ্ট কয়েকজনই ছিলেন। মা-বাবা সহ নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া কর্ডন করা অংশে কেউ ছিলেন না।”