সুমনা মিশ্র। কলকাতা সারাদিন।
ট্যাব, শিক্ষা, চাকরি, আবাস সহ নানা বিষয় নিয়ে দুর্নীতি তো আছেই। এবার সামনে ক্যাথিটার নিয়ে বিরাট দুর্নীতির অভিযোগ। স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে খবর, এসএসকেএম, এম আর বাঙুর হাসপাতাল, দার্জিলিং হাসপাতাল, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ সহ রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে এবার ক্যাথিটার নিয়ে বড় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে।
সূত্রের খবর, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ওই সরকারি হাসপাতালগুলিতে ক্যাথিটার সরবরাহ করবে এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে কলকাতার হাতিবাগান এলাকার একটি সংস্থা দিনের পর দিন ধরে একাধিক সরকারি হাসপাতালে ক্য়াথিটার সরবরাহ করে গিয়েছে।
তবে এখানে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। যে আন্তর্জাতিক সংস্থা এতদিন ধরে এই ক্যাথিটার সরবরাহ করলেন না অথচ চুক্তি তাদের সঙ্গে তারা কেন কিছু বললেন না? আবার হাসপাতালে যারা ক্যাথিটার কিনলেন সেই বিভাগ কিছু বুঝতেই পারল না এটা কীভাবে সম্ভব? কারণ আন্তর্জাতিক সংস্থার ক্যাথিটারের যে মান আর স্থানীয় ক্যাথিটারের যে মান তার তো আকাশ -পাতাল ফারাক। তাহলে কেন ধরা পড়ল না? আসলে ভূত তো সর্ষের মধ্যেই।
একটি ক্যাথিটারের জন্য রাজ্য সরকার খরচ করেছে ৪১৭৭ টাকা করে। অথচ সেই ক্যাথিটারের নামে এসেছে হাতিবাগানের এক ডিস্ট্রিবিউটরের সরবরাহ করা নিম্নমানের স্থানীয়স্তরের ক্যাথিটার। আর তার ফল ভুগতে হয়েছে সাধারণ রোগীকে।
অর্থাৎ সরকার ক্যাথিটারের জন্য যে দাম দিয়েছে সেটা হল আন্তর্জাতিক সংস্থার যে ক্যাথিটার সেটার দাম। কিন্তু সেই দামে সরকারি হাসপাতালে এসেছে অতি নিম্নমানের ক্যাথিটার।অভিযোগ এমনটাই।
এমনকী এই ক্যাথিটার থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনাও রয়েছে। সব মিলিয়ে এবার ক্যাথিটার নিয়ে একাধিক সরকারি হাসপাতালে পাহাড় প্রমাণ উদ্বেগ মাথাচাড়া দিয়েছে।
অপারেশন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এই ক্যাথিটার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ওপেন হার্ট সার্জারি সহ অন্যান্য বড়সর অপারেশনের পরে এই ক্যাথিটার ব্যবহার করা হয়। এই ক্যাথিটার দিয়ে রোগীর গলা বা কুঁচকির মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু যে ক্যাথিটার ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলি তো সেই হাতিবাগানের ডিস্ট্রিবিউটরের। এর জেরে বার বার বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।
এদিকে চিকিৎসকদের এনিয়ে নানা সন্দেহ দানা বাঁধে । দক্ষ চিকিৎসকরাও দেখেন ধমনীতে জড়িয়ে যাচ্ছে ক্যাথিটার। এরপরই তাঁরা এনিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করেন। আর তারপরই দেখা যায় ভয়াবহ অনিয়ম। কথা ছিল আন্তর্জাতিক সংস্থার ক্যাথিটার আসবে হাসপাতালে। সেই জায়গায় একেবারে নিম্নমানের ক্যাথিটার পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।