সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনের (Junior Doctors Hunger Strike) ৬ দিন। আর এবার জুনিয়র ডাক্তারদের চিঠি দিলেন মুখ্যসচিব। জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ওই চিঠিতে। পাশাপাশি ইমেলে যোগ করা হয়েছে স্টেটাস রিপোর্টও।
দশ দফা দাবি পূরণে শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে চলছে টানা অনশন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অনিকেত মাহাতো। বাকি ৬ জনের অবস্থারও অবনতি হয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলেই জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি।
ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে প্রায় দেড়শো ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ৭জন জুনিয়র ডাক্তার। প্রত্যেকের অবস্থাই উদ্বেগজনক। নমুনা পরীক্ষায় কিটোন বডি পজিটিভ এসেছে। প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কিডনিতে। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে আসেন চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন।
এদিন, অনশন মঞ্চে যান কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপকদের প্রতিনিধিরা। আমরণ অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন জানান তাঁরা। শুক্রবারও জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে প্রতীকী অনশনে বসেন সিনিয়র চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষ।
এই আবহে এবার জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন প্রত্যাহারের আবেদন জানালেন মুখ্যসচিব। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপের কথা জানিয়ে ইমেল করেছেন তিনি। রাজ্য সরকারের কাছে স্টেটাস রিপোর্ট চেয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।
তার প্রেক্ষিতে স্টেটাস রিপোর্ট অ্যাটাচ করে পাল্টা ইমেল করলেন মুখ্যসচিব।
মহাষ্টমীতে ৬ দিনে পড়ল ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের আমরণ অনশন (Junior Doctors Hunger Strike)। হাসপাতালে নিরাপত্তার কাজ কতদূর এগোল, তা জানতে চেয়ে মুখ্যসচিবকে মেইল জুনিয়র চিকিৎসকদের। শুক্রবার পাল্টা জবাবি মেইল পাঠালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (Chief Secretary Manoj Pant)।
মেইলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া পিডিএফে বিস্তারিত পদক্ষেপের কথা জানায় রাজ্য। রাজ্যের দাবি, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে সর্বমোট ৭ হাজার ৫১টি সিসিটিভি বসানো হচ্ছে। ৮৯৩টি নতুন ডিউটি রুম এবং ৭৭৮টি শৌচাগার বানানো হচ্ছে বলেও জানায় রাজ্য।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালে অনধিকার প্রবেশ আটকাতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালুরও আয়োজন করা হচ্ছে বলে দাবি রাজ্যের। এছড়াও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অ্যালার্ম সিস্টেম ও পর্যাপ্ত আলোরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এসমস্ত প্রকল্পে মোট ১১৩ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে বলে জবাবি মেইলে জানিয়েছে রাজ্য।
রাজ্যজুড়ে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এই উন্নয়নমূলক কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি রাজ্যের। যদিও আরজি করে এখনও তা হয়নি। আরজি করে উক্ত কাজের জন্য তদন্তকারীদের তরফে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট ২ দিন আগে হাতে এসেছে বলে দাবি করেছে রাজ্য। যদিও ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে রাজ্য।
অভয়াকাণ্ডে চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। কর্মস্থলে এবার মহিলা চিকিৎসকদের সুরক্ষা প্রদানে ১ হাজার ১১৩ জন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ করল রাজ্য। হাসপাতালে পুলিশ প্যাট্রোলিংয়ের পাশাপাশি ১৫১৪ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য।