কনিষ্ক সামন্ত। কলকাতা সারাদিন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘খাসতালুকে’ গোহারা হারল বিজেপি। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিপুল জয় পেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। মোট ১০৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে গেল ১০১টি আসন। বিজেপি পেয়েছে ৬টি আসন। আর একটি আসন গিয়েছে নির্দল প্রার্থীর দখলে। এই নির্বাচনকে নিয়ে সকাল থেকে টানটান উত্তেজনা ছিল।
তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষ পর্যন্ত হয় বিজেপির। তারা পথ অবরোধ করে। নানা অভিযোগ তোলে। কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল নিজের গড়েই হেরে বসে রইল গেরুয়া শিবির।
এই জয়ের পর সবুজ আবিরে ঢেকে যায় কাঁথি এলাকা। এই লোকসভা কেন্দ্র থেকেই বিজেপি জিতেছিল। কিন্তু হেরে গেল সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে। এই নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা ১০১ আর বিজেপি ও নির্দল মিলিয়ে ৭টি আসন জিতেছে। এই ফলাফলে একটা বিষয় স্পষ্ট হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ উজ্জ্বল হয়েছে। কাঁথি-সহ সবকটি বুথেই খাতা খুলতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। মানুষ বিজেপিকে বহিষ্কার করেছে।’ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পরাজয় সুদূরপ্রসারি প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটা ঘরের মাঠে বিজেপির বড় সেটব্যাক।
বিজেপি এখানে জিতে হুঙ্কার ছাড়বে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়ে সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন হয়েছে। তারপরেও লজ্জাজনক পরাজয় দেখতে হয়েছে পদ্ম শিবিরকে। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে জেতার দায়িত্ব পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকেই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরঙ্কুশ জয়ের পর অখিল গিরির বক্তব্য, ‘অনেকদিন ধরে আইনি জটে এখানকার নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করা হয়েছে। যা রাজ্যের ইতিহাসে লজ্জার। তার পরেও মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’
শুভেন্দু অধিকারী এই নিয়ে কোনও মন্তব্য এখনও করেননি। তবে নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৬টি আসনের মধ্যে ১৫টি জিতে মোদীজিকে উপহার দেবেন। সেখানে সমবায় নির্বাচনেই এমন ধরাশায়ী হতে হল। ভাই বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘বাংলার কোথাও যে স্বাভাবিক নির্বাচন হয় না সেটা কাঁথি সমবায় নির্বাচনে স্পষ্ট হল। রাজ্যের পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সমবায় নির্বাচনেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হল। একাধিক বুথে অশান্তি ছড়িয়েছে। বহু জায়গায় বিজেপির ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ নিজেদের মতামত জানানোর সুযোগ পেলেন না।’
তৃণমূল কংগ্রেসে থাকার সময় এই কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথি আর মারিশদা ছাড়া কোথাও খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। কাঁথি-১ ব্লকে দু’টি আসন, কাঁথি-২ ব্লকের একটি আসনে জিতেছে বিজেপি।