শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘জনতার গর্জন মমতার বিসর্জন। নন্দীগ্রামের চেয়েও বেশি ভোটে ভবানীপুরে হারাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’ এভাবেই রেড রোডে দুর্গাপূজা কার্নিভালের দিনে ধর্মতলায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পুজোর আগে প্রবল বৃষ্টিতে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১২ জন সহ নাগরিকের মৃত্যুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দায়িত্ব পালন করেননি। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও কলকাতার নগরপাল মনোজ ভার্মার যৌথ ভেঞ্চারেই এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলি ঘটে বলে দাবি শুভেন্দুর। ফিরহাদের গ্রেফতারির দাবি নিয়ে মমতাকে ধিক্কার জানিয়ে আজ কলেজ স্কোয়্যার থেকে ডোরিনা ক্রসিং অবধি শুভেন্দুর নেতৃত্বে মিছিল হলো। বেলা ২টো থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে সর্বাধিক তিন হাজার লোক নিয়ে এই কর্মসূচি করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনেই মিছিলে হাঁটলেন শুভেন্দুরা।
উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ২১ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের পরও মুখ্যমন্ত্রীর পুজো কার্নিভালকে গুরুত্ব দিয়ে রেড রোডে গোটা প্রশাসনকে নিয়ে উপস্থিত থাকার তীব্র সমালোচনা করেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু বলেন, হিজাব পরে পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন মা দুর্গাকে আঘাত। অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদীর সেকেন্ড ম্যান, কাশ্মীরের পর লাদাখকে সোজা করে দিয়েছেন। সেই অমিত শাহকে নকল করে মুখ্যমন্ত্রী কালীঘাটে গিয়েও অনাচার করেছেন চরণামৃত নিয়ে। এই অনাচারের ফল এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়। গতকাল সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের নিরঞ্জন যাত্রা যা পরিবর্তন যাত্রায় পরিণত হয়েছিল সেখানে সনাতনের আধ্যাত্মিকতা আর অপারেশন সিঁদুরের জাতীয়তাবাদ মিলেমিশে একাকার হয়েছিল। সেখানে মা দুর্গা আগে গিয়েছেন, পিছনে ছিলেন সন্তানরা। আর রেড রোডে ‘খালা মমতা’ গোটা প্রশাসনকে নিয়ে ময়ূরপঙ্ক্ষীতে বসে রয়েছেন। আর মমতা পুলিশ মূর্তিকে দড়ি বেঁধে তাঁর সামনে দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মমতার এক পাশে ইন্দ্রনীল, আরেক পাশে নচিকেতা।
দিঘায় জগন্নাথ ধামের প্রসাদের নামে শামসুদ্দিনের হালাল প্যাঁড়া খাওয়ানো থেকে শুরু করে কালীঘাট মন্দিরের ঘটনা তুলে ধরে প্রবল সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, ‘ওঁর লজ্জা নেই। ছাব্বিশে জনতার গর্জন, মমতার বিসর্জন। আমি দেখিয়েছি নন্দীগ্রামে। আপনাদের এবার দেখাতে হবে। ভবানীপুরে আরও বেশি ভোটে হারাব ওঁকে। অক্টোবরে এসআইআর। মৃতদের নাম কাটা যাবে। না কাটলে খবর দেবেন আমাকে। এসআইআর সেমিফাইনাল। ১ কোটি ভুয়ো ভোটারের নাম বাদ যাবে। আর ফাইনালে মমতা কুপোকাত। দড়ি ধরে মারো টান। এরপরই সমবেত জনতার গর্জন, রানি হবে খান খান।’

শুভেন্দু আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী রেড রোডে মনোজ পন্থ, রাজীব কুমারদের নিয়ে বসে আছেন। ওদিকে কালিম্পং, কার্শিয়াং বিচ্ছিন্ন। মিরিকে মৃত্যুমিছিল। ক্রান্তি, নাগরাকাটা, চা বাগান, গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সব চ্যানেলে পছন্দের বিশেষ সাংবাদিক আছেন। তাঁদের সঙ্গে উনি কথা বলেন, ভাইফোঁটা দেন। আজ তিনি বলেছেন, কার্নিভালে ১০০ ক্লাব আসবে। সেটাই প্রায়োরিটি। এই হলেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী! ওকে ছাড়া হবে না।