সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
ক্রিসমাসের আগে বাংলার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের জন্য বড় উপহার নিয়ে এল রাজ্য সরকার। ‘বাংলার বাড়ি’ তথা পশ্চিমবঙ্গ আবাস যোজনার টাকা আজ মঙ্গলবার থেকেই উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া শুরু হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ নবান্ন সভাঘর থেকে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন। বড়দিনের আগেই রাজ্যের ১২ লক্ষ পরিবারের অ্যাকাউন্টে এই টাকা পৌঁছে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আজ একটা ঐতিহাসিক দিন। রাজ্য সরকার তার সীমিত ক্ষমতা সত্ত্বেও নিজের টাকা থেকে বাংলার বাড়ি গ্রামীণ প্রকল্পে রাজ্যের ২১টি জেলার ১২ লক্ষ যোগ্য পরিবারকে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা তুলে দিচ্ছে। দ্বিতীয় কিস্তিতে আরও ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে টাকা। এজন্য খরচ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “১২ লক্ষ সুবিধাভোগী এই টাকা পাবেন। ৩-৪ দিনের মধ্যে সকলের কাছে এই টাকা পৌঁছে যাবে। যোগ্য সুবিধাভোগীদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার জন্য কড়া হাতে সার্ভে করা হয়েছে। প্রায় ৩৪ লক্ষ বাড়িতে সমীক্ষা চলেছে। সমীক্ষা করে ২৮ লক্ষ যোগ্য সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। প্রথম ধাপে এর মধ্যে ১২ লক্ষ পরিবারকে টাকা দেওয়া হল।” পাশাপাশি তিনি জানালেন, “বাকি ১৬ লক্ষ পরিবারকে কেন্দ্র যদি টাকা না দেয়, তাহলে রাজ্যই ব্যবস্থা করবে। ২০২৬ সালের আগে সকলকে দুই কিস্তিতে টাকা দেওয়া হবে। রাজ্যজুড়ে আবার সার্ভে করেছি। প্রায় ৩৬ লক্ষ সার্ভে করা ছিল। আমরা আবার সার্ভে করেছি। ২৭ হাজারেরও বেশি টিম ৩৫ লক্ষ মানুষের বাড়িতে গিয়েছে। ২৮ লক্ষের বেশি যোগ্য রয়েছে। মধ্যে ১২ লক্ষকে আজ দিচ্ছি। বাকি থাকবে ১৬ লক্ষ যোগ্য। আগামী ৬ মাসে, তারপরের ৬ মাসে, ২৬ প্রথমের মধ্যেই দিয়ে দেব। মে-জুনের মধ্যে দেব, ৮ লক্ষকে, পরের ডিসেম্বর জানুয়ারিতে বাকি ৮ লক্ষকে দেব।”
মমতা বলেন, “আবাস যোজনায় বাংলা ১ নম্বরে ছিল। ৩ বছর ধরে বাংলার গরিব মানুষরা বঞ্চিত। গত ৩ বছর ধরে টাকা দেয়নি কেন্দ্র সরকার। ৩ বছর ৬৯টা টিম পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, কোনও লাভ হয়নি। মুখে বলে অভিযোগ রয়েছে। দেখেছে, সার্ভে করেছে, মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে, কিন্তু লাভ হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আবাসে ১ নম্বর থাকা সত্ত্বেও গত ৩ বছর ধরে কেন্দ্র টাকা দেয়নি, বাংলার গরিব মানুষরা বঞ্চিত হচ্ছিলেন। তাই আমরা নিজেরাই ওই বাড়ি তৈরি করে দেব বলেছিলাম। সেই কথা রাখার কাজ শুরু হল। আমরা কথা রাখতে জানি।”