সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। আর মহালয়ার আগের দিনই বাংলা জুড়ে উৎসবের সূচনা হলো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। শ্রীভূমি স্পোটিং ক্লাবে উত্সবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে বীরপাড়া ও দুবরাজপুরে নতুন ফায়ার স্টেশন ও দমকলের ৫০ বাইকের উদ্বোধনও।
পিতৃপক্ষে পুজোর উদ্বোধন নিয়ে নানা সময়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। তবে এবার এনিয়ে যথেষ্ট সতর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা জুড়ে উৎসব উৎসারিতর সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমি আসলেও পুজো মণ্ডপ উদ্বোধন করি না। আগামীকাল থেকে মাতৃপক্ষ শুরু হবে।
মহালয়ার পরে সেই কাজটা আমি করি। আজকে আমার ফায়ার ব্রিগেডের বীরপাড়া এবং দুরবাজপুরে… অনেকে উপস্থিত আছেন। বাইকগুলি তৈরি করা হয়েছে ফায়ার ব্রিগেডের, এই কারণে ঘিঞ্জিতে যখন আগুন লাগে, দমকল ঢোকার যেখানে রাস্তা নেই। কোটি কোটি বাড়ি আছে এরকম। সেই জায়গাটায়, সেই জায়গায় যাতে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ঢুকতে পারে, সেইজন্যই এই সিস্টেমটা করা হয়েছে। কিছু ই-সাইকেলও পুলিস করেছে’।
বিমানবন্দর লাগোয়া শ্রীভূমি স্পোটিং ক্লাবে পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা খোদ রাজ্যের দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী সুজিত বসু। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন এই পুজো দেখতে। আমি বলব, ট্রাফিক যেন ব্যাহত না হয়। আগেরবার খুব নজর দিয়েছিলেন, এবারও দয়া করে নজর দেবেন। কারণ, এয়ারপোর্ট যাওয়ার রাস্তা এটা। অনেক মানুষ ইমাজেন্সিতে এয়ারপোর্ট যেতে হয়। তাঁরা যাতে কেউ ফ্লাইট মিস না করে, সেটা দেখা আমাদের পবিত্র কর্তব্য়’।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে বাদ যায়নি বন্যার প্রসঙ্গও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার চারিদিকে বন্যা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, আমি মোটামুটি সবকটা জায়গায় মিটিং, ব্যবস্থা করা, ত্রাণ দেওয়া থেকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসন, মুখ্যসচিবের অধীনে পুলিস। আমাদের দল এমনকী, দলের নাম ব্য়বহার করেনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নামে কাজটা করেছি, একটাই প্ল্যাটফর্ম থেকে। প্রথম ত্রাণটা কিন্তু পার্থরা(পার্থ ভৌমিক) আমাদের বানিয়ে দিয়েছিল। পুলিসকে দিয়ে ঘাটালে পৌঁছে দিয়েছিলাম। বড়মা ওখান থেকে ২ হাজার প্যাকেট দিয়েছে। সেটা ভুতনীতে যাচ্ছে। খানাকুলে পাঠিয়েছি। জয়রাম বাটি রাম কৃষ্ণ মিশন তারাও কাজ করেছে। এটা তো ম্যানমেড বন্যা, তৈরি করে দেওয়া। আগামিকাল, মহালয়া আছে, হাই টাইড আছে’।
মহালয়ার দিনে সকলকে বাড়তি সাবধানতা ও অবলম্বন করতে বলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি আদি গঙ্গার পাশে থাকি ছোট থেকে। আজ বড় গঙ্গা দেখতে দেখতে এলাম পুরো ভর্তি। আকাশের মুখটা দেখলাম পুরো গম্ভীর। মেঘলা-মেঘলা। কাল মহালয়া। আবার সূর্যগ্রহণ আছে। তার একটা প্রভাব পড়ে। যদিও আমাদের এখানে দিন নয় রাত। অনেক জায়গায় দিন। সারা পৃথিবী জুড়ে হয় বলে এদিকেও পড়বে। তার প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে। এবার উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বন্যা হয়েছে। আমি ত্রাণ দেওয়া থেকে শুরু করে সব করেছি। এমনকী এবার আমরা দলের নাম ব্যবহার করিনি। সবটাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করার চেষ্টা করেছি। আমার অনেক সহকর্মীরা সাহায্য করেছেন। একটা জায়গায় কিচেন তৈরি করে খাবার দেওয়া যায়। আমরা চাল-ডাল-আলু-দুধের প্যাকেট সব দিয়ে ছেলেমেয়েদের দিয়ে প্যাকেট করিয়েছি। এটা তো ম্যানমেড বন্যা। তৈরি করে দেওয়া।”