সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“আমাদের মৎস্যজীবীদের জেলে বেঁধে লাঠিপেটা করেছে বাংলাদেশ। আমি জানতাম না অনেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। জানতে পারলাম তাঁদের মারা হয়েছে। ফলে কয়েকজনের কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট রয়েছে। ওঁদের ভাল করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেব।” গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্ত ৯৫ জন মৎস্যজীবীকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে এভাবেই বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবারই দু’দিনের গঙ্গাসাগর সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলার উদ্বোধনে গিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশে বন্দি ভারতীয় ৯৫ জন মৎস্যজীবীদের ফেরা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা বাংলাদেশ থেকে ৯৫ জনকে আনতে পেরেছিলাম। কিন্তু একজন ভয়ে লাফ দিয়েছিলেন তিনি মারা যান। তাই তাঁর পরিবারকে ২ লাখ টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছিলাম। ৯৫ জনের হাতে ১০ হাজার টাকা করে তুলে দিচ্ছি।”
বাংলাদেশের জুয়েল থেকে মুক্তি পেয়ে বাংলায় ফিরে আসা মৎস্যজীবীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যতক্ষণ না আপনারা আসছিলেন ততক্ষণ পরিবার-পরিজনরা অনেক কষ্টে ছিলেন। আমরা ৯৫ জন ভাই যাদের আমরা ছাড়িয়ে আনতে পেরেছি অনেক কষ্টে। আমি জানতাম না অনেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। জানতে পারলাম তাঁদের মারা হয়েছে। ফলে কয়েকজনের কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট রয়েছে। ওঁদের ভাল করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেব। জলের মধ্যে অনেক সময় সীমানা ঠিক করতে পারে না। কিন্তু আমরা বারণ করব মহাজনদের, ট্রলারে যাঁরা যান তাঁদের বলব ক্রস করবেন না। সে মাছ উঠুক বা না উঠুক। বাংলাদেশের ট্রলার এখানে ঢুকে গেছিল। তাঁদের আমরা চিকিৎসা করাই, যত্ন করে রেখেছিলাম। তখন ওঁরা বুঝতে পেরেছে। দুই দেশ মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ থাকুক এটা চাই। যাতে দেশের কোনও বদনাম না হয়, বাংলার কোনও বদনাম না হয়, আমরা বহুবার কেন্দ্রকে জানিয়েছি। আমরা নিজেরাও খোঁজ রাখতাম। তারপর একটা আদানপ্রদান হয়। মৎস্যজীবীদের জন্য সমুদ্র সাথী প্রজেক্ট তৈরি করেছি। আজকেরটা কিন্তু আলাদা। এই প্রজেক্টটা কিন্তু চালু হবে। ২ লক্ষ মৎস্যজীবী উপকৃত হবেন।”
এই প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মমতা জানান, “আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন চোখে জল আসার মতো, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা একে অপরকে ভালবাসি। কিন্তু মৎসজীবীরা পরিস্থিতির শিকার। আগে মৎস্যজীবীরা মারা গেলে কেউ খুঁজে পেত না। কিন্তু আমরা এখন একটা কার্ড দি। এই কার্ডটির বিশেষত হল ওই কার্ডটির মাধ্যমে ট্র্যাক করতে পারি। আমরা জানতে পারি পুলিশ স্টেশনে ডিটেন করে রাখা হয়েছে। আমরা দুই দেশ। দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে পারি। একটা লোক যাতে পুলিশ স্টেশন থেকে যাতে জেলে থাকতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম।”