সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
বাঘাযতীনে বহুতল বিপর্যয়ে গ্রেফতার প্রোমোটার। বকখালি থেকে অভিযুক্ত প্রোমোটারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেবে সুন্দরবন পুলিশ জেলা। আবাসানটা ভেঙে পড়তেই আর খোঁজ মিলছিল না প্রোমোটারের। হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। কিন্তু, খোঁজ মেলেনি। অবশেষে বাঘাযতীনে বহুতল বিপর্যয়ের ৩ দিনের মাথায় পাকড়াও প্রোমোটার। বকখালি থেকে ওই সুভাষ রায় নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকেই একাধিক জায়গায় লুকিয়ে থাকছিলেন সুভাষ। আত্মগোপন করেছিলেন বকখালির এক হোটেলে। গোপন সূত্রে সেই খবর যায় পুলিশের কাছে। তারপরই ওই হোটেলে হানা দেয় ফ্রেজারগঞ্জ থানার একটি টিম। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরেই কলকাতা পুলিশের একটি দল তাঁকে আনতে বকখালির উদ্দেশ্যে ছুটে যায়।
স্থানীয়দের দাবি, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও নজরদারি ছাড়াই, হেলে থাকা অ্যাপার্টমেন্ট সোজা করতে গিয়ে বিপর্যয় ঘটেছে। বহুতলের বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৩ সালে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ৫-৬ বছর পর সমস্যা শুরু হয়।
প্রোমোটার সম্প্রতি হরিয়ানার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বহুতল সোজা করার কাজ করাচ্ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, জলাজমি বুজিয়ে বহুতল তৈরির পাশাপাশি, পুরসভার অনুমতি ছাড়াই তিনতলা ফ্ল্যাটবাড়ি চারতলা করা হয়েছিল। সেই কারণেই বিপত্তি। এরপরই প্রোমোটার সুভাষ রায়, ফ্ল্যাটের মালিক এবং হরিয়ানার সংস্থার বিরুদ্ধে নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনা সামনে আসতেই বেপাত্তা হয়ে যায় অভিযুক্ত প্রোমোটার। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বৃহস্পতিবার বকখালি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। যদিও এখনও পর্যন্ত হরিয়ানার ঠিকাদার সংস্থারও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ইতিমধ্যেই বাঘাযতীনের অভিশপ্ত আবাসনটি ভেঙে ফেলার কাজ চলছে। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সাংবাদিক বৈঠকে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রকাশ করেন। ক্ষোভের সুরেই বলেছিলেন, “এটা একটা ইঞ্জিনিয়ারিং ফল্ট হয়েছে। পৌরসভাকে না জানিয়ে প্রোমোটার নিজে পাকামি করেছে।” ফিরহাদের দাবি, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ না নিয়ে কাজ করা হচ্ছিল। তাঁর কথায়, “বাড়িটা একটুখানি বেঁকে ছিল। সেটাকে সোজা করতে গিয়েছিলেন। সেই করতে গিয়ে এত বড় বিপর্যয়।”
পলাতক বন্দি ও সাহায্যকারীর ছবি দিয়ে ২ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ। পলাতক বন্দির সাহায্যকারীর বাংলাদেশি-যোগ মিলেছে। পুলিশের দাবি, এই ব্যক্তিই আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছিল।কিন্তু পুলিশ পাহারায় থাকা বন্দির হাতে কীভাবে পৌঁছল অস্ত্র? পুলিশ তাহলে কী করছিল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে এবার কড়া বার্তা দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। এদিন রাজীব কুমার বলেন, “আপনারা জানেন আমাদের পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানেও যাব। আমাদের ফোর্স মানুষকে নিরাপত্তা দেয়।মানুষ যাতে ভালভাবে থাকতে পারে সেইকাজে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু যদি কোনও দুষ্কৃতী আমাদের ওপর গুলি চালায় আমরা ওর থেকে চার গুণ গুলি চালাব। আমরা কিন্তু এবিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।”