সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
আরজিকর আন্দোলনের সময়ে আরজিকরের নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে দেড়শ গ্রাম বীর্য পাওয়া গেছে বলে গোটা বাংলার পাশাপাশি দেশ জুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন সিনিয়র ডাক্তার সুবর্ণ গোস্বামী। সিবিআই অথবা সুপ্রিম কোর্ট বারে বারে ফরেনসিক পরীক্ষার পরেও দেড়শ গ্রাম বীর্য তো দূরের কথা, ১ গ্রাম বীর্য খুঁজে পায়নি নির্যাতিতার শরীরে।
এবার এটাই সেই দেড়শ গ্রাম বীর্যতত্ত্বের জনক ডাক্তার সুবর্ণ গোস্বামীর বিরুদ্ধে থানায় দায়ের হলো লিখিত অভিযোগ।
ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী সহ ৪ সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হল। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল সূত্রে খবর, সুবর্ণ গোস্বামী, মানস গুমটা, রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় সেই লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মেডিক্যাল কাউন্সিলের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধাপ্রদান করছিলেন বলে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
যদিও বিষয়টি নিয়ে আপাতত ওই চার সরকারি চিকিৎসকের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
‘আরজি কর কাণ্ডের সময় ছাড় দেওয়া হয়েছিল…’,
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রেক্ষিতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক সদস্য জানিয়েছেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে কাউন্সিলের সামনে বামপন্থী সংগঠন এবং বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। সেটা মেনে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু তারপরও কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের প্রতিনিধিরা নিয়মিত কাউন্সিলের কাজে বাধাদান করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের ওই সদস্য। তিনি দাবি করেছেন, রোগী, রোগীর পরিজন এবং চিকিৎসকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক সদস্য।
কিঞ্জল ও আসফাকুল্লার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ কাউন্সিলের
আর সেই বিষয়টি এমন একটা সময় সামনে এসেছে, যখন আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ কিঞ্জল নন্দ এবং আসফাকুল্লা নাইয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। আসফাকুল্লাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। আর তারপর কিঞ্জলের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য চেয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে কিঞ্জলকে দেখা গিয়েছিল (যিনি অভিনয়ও করে থাকেন)। সেটার জন্য কিঞ্জল অনুমতি নিয়েছিলেন কিনা, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি) হিসেবে তাঁর উপস্থিতির হার কত ছিল, কতদিন ছুটি নিয়েছেন, ভাতা হিসেবে কত টাকা পান কিঞ্জল সেইসব বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।
যদিও কিঞ্জলের দাবি, আরজি কর কাণ্ডের পরে তাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন বলে হয়তো রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে এত তৎপরতা দেখানো হচ্ছে। অথচ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যখন আর্থিক অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছিল, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছিল কাউন্সিল। আর তাছাড়া নিজের কাজের পরে কী করবেন, সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।