সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
মহারাষ্ট্রের আতঙ্ক ছড়াল বাংলাতেও। এবার গুলেন বেরি আতঙ্ক কলকাতাতেই। গুলেন বেরি সিনড্রোমে আক্রান্ত ২ শিশুর সন্ধান মিলল এ শহরেই। কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের ভেন্টিলেশনে ভর্তি রয়েছে ২ শিশু। শুধু সেখানেই নয়য়, শহরের আরও কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি GB সিনড্রোমে আক্রান্তরা।
গত কয়েকদিন ধরেই মহারাষ্ট্রে গুলেন বেরি সিনড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পুণেতে আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। রবিবার অবধি পাওয়া তথ্য অনুসারে পুণেতে ১০১ জন এই অটোইমিউন অসুখে আক্রান্ত।
অসমর্থিত সূত্রের দাবি, শোলাপুরে মৃত্যু হয়েছে একজনের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, GB সিনড্রোম একটি অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার। এক্ষেত্রে প্রথমে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ হয়। এরপরই শরীরে থাবা বসায় গুলেন বেরি সিনড্রোম। নিম্নাঙ্গ অবশ হয়ে রোগীর হাঁটাচলা বন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। ফুসফুসের সঙ্গে যুক্ত নার্ভ শিথিল হয়ে সমস্যা বাড়ায়।
এর আগেও ভারতে এই রোগ হানা দিয়েছিল। এবিপি লাইভের সঙ্গে এই রোগের চিকিৎসা করার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন ফরিদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাঁরা জিবিএস-এ আক্রান্ত এক রোগীকে চিকিৎসা করেছিলেন অতীতে। তাঁরা জানান, জিবিএস একটি স্নায়বিক অসুখ। প্রথমে হাতে-পায়ে দুর্বলতা দেখা যেতে পারে। তারপর শরীরে অসম্ভব কাঁপুলি অনুভব হতে পারে। এই স্নায়বিক দুর্বলতা আস্তে আস্তে হাত-মুখ সহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে যায়। হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে। সংক্রমণ ফুসফুসকে ঘায়েল করলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাও হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, উপসর্গগুলি দেখলেই অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। তাহলে এর পরিণতি ভয়াবহ হয় না। ফরিদাবাদের অমৃতা হাসপাতালের ২০২৩ সালে আনমোল সিং (নাম পরিবর্তিত) বলে এক কৃষক ভর্তি হন এই অসুখে আক্রান্ত হয়ে। তাঁর বয়স ছিল ৩৭ এর আশেপাশে।
ডায়ারিয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। পরে তাঁর পাও অবশ হয়ে যায়। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে, এই অসাড়ভাব সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় পক্ষাঘাতগ্রস্থর মতো অবস্থা হয়।
এথচ এমআরআই স্ক্যানে কোনও অস্বাভাবিকতাধরা পড়েনি। তারপর ধরা পড়ে গুলেন বেরি সিন্ড্রোম। তারপর প্রায় এক মাসের চিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি ইত্যাদির পরে সুস্থতার পথে এগোন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে , Guillain-Barré সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার। উপসর্গ অনুসারে চিকিৎসার দরকার। কার কেমন উপসর্সগ, সেই অনুসারে চিকিৎসা করতে হবে। সঙ্গে প্রয়োজন হতে পারে কিছু ইমিউনোলজিক্যাল থেরাপির।