রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
ছোটবেলা থেকেই প্রেমে পড়েছিলেন প্রতিবেশী প্রিয়াঙ্কার। বিয়ে করে সংসার পেতেছিলেন সোনারপুরে।
কিন্তু পরকীয়ার জেরে ছারখার হয়ে গেল সোনারপুরে তাদের সোনার সংসার।
ঘুমের মধ্যেই খুন গৃহবধূ। জানাজানি হওয়ার আগেই সোজা থানায় পৌঁছে গেলেন স্বামী। পুলিশকে নিজেই জানিয়ে দিলেন, খুন করেছেন তিনি। কেন করলেন এমন! আট বছরের বিয়ের সম্পর্কে কী এমন ঘটেছিল, সবটাই জানিয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানা এলাকার রাজপুর সোনারপুর পুরসভার মাহিনগরের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ের হেরোভাঙা এলাকার বাসিন্দা বাপি গায়েন বছর আটেক আগে বিয়ে করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা গায়েনকে। প্রতিবেশী প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাঁর, তারপরই বিয়ে হয় তাঁদের।
বিয়ের পর বাপি পার্ক সার্কাসের একটি কারখানায় চাকরি পান। তারপর স্ত্রীকে নিয়ে সোনারপুরের মাহিনগরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। সেই ভাড়াবাড়ির পাশের ঘরেই থাকতেন সুপ্রকাশ দাস নামে এক যুবক ও তাঁর স্ত্রী। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ধীরে ধীরে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সুপ্রকাশের। শুরু হয় গোপন প্রেম!
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই অশান্তি শুরু হয় বাপি-প্রিয়াঙ্কার সংসারে। প্রতিবেশীরাও জানাচ্ছেন, স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি লেগেই থাকত। এরই মধ্যে স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান সুপ্রকাশ। তবে সুপ্রকাশের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার সম্পর্ক ছিল বলেই জানতেন পরিচিতরা। অভিযোগ, তাঁরা দু’জনে মাঝে মাঝে ধানমাঠ এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে একসঙ্গে সময়ও কাটাতেন। এই খবর কানে যাওয়ার পরই ক্ষেপে যান বাপি।
বাপির অভিযোগ, তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করছিল প্রিয়াঙ্কা ও সুপ্রকাশ। ফোনে আলোচনা করার সময় নাকি সে কথা শুনে ফেলেন বাপি! তারপর নিজের জীবন বাঁচাতেই স্ত্রীকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন! খুনের পর এমনটাই দাবি বাপির।
অভিযোগ, রাতে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়তেই শ্বাসরোধ করে খুন করেন বাপি। স্ত্রীকে খুনের পর নিজের অপরাধ স্বীকার করে সোজা সোনারপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। বাপি ও প্রিয়াঙ্কার এক ৬ বছরের সন্তান রয়েছে।
অভিযুক্ত বাপিকে জেরা করে ঘটনার সম্পূর্ণ তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়ার জেরেই এই পরিণতি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সোনারপুর থানার পুলিশ।