শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে শর্তসাপেক্ষে মোথাবাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। মঙ্গলবার আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, মোথাবাড়ি থানার অধীনে এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারবেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রস্তাবিত চার জায়গায় যেতে পারবেন। তিনি ৪টি অঞ্চলে যেতে পারবেন। সঙ্গে যাবেন বিধায়ক অশোক দিন্দা। জানা যায়, গঙ্গাপ্রসাদ অঞ্চল, উত্তর লক্ষ্মীপুর অঞ্চল, মোথাবাড়ি অঞ্চল এবং হামিদপুর অঞ্চল–এই ৪ অঞ্চলে যাবেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবেদন করে জানিয়েছিলেন, কোনও মিছিল তিনি করবেন না। কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। কেবল এক জন নিরাপত্তারক্ষী ও একজন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে তিনি মোথাবাড়ি যেতে চান।
তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীকে মোথাবাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিলেও বেশ কয়েকটি শর্ত বেঁধে দিয়েছেন। ১১ এপ্রিল ১০-৩ টের মধ্যে যেতে পারবেন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীও থাকবে। কটা কনভয় যাবে, তা প্রশাসনকে জানাতে হবে। পুলিশ সুপার গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবেন বলে আদালতের নির্দেশ। মোথাবাড়িতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ, পরিস্থিতি কোনওভাবে সমস্যাজনক হলে, ফোর্স পাঠিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবে কোনও মিছিল করা যাবে না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ এপ্রিল। সেদিন আদালতে গোটা বিষয়টি রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে।
গত শুক্রবার মোথাবাড়ি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ঘটনাটি স্পর্শকাতর, রাজ্য সরকারের দায়িত্ব নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। বিচারপতিরা এও বলেন যে, এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু এদিনের শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে এএসজি সওয়াল করেন, পরিস্থিতি এমন, চাইলে মোথাবাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারে।
প্রসঙ্গত সপ্তাহ খানেক আগে থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে মালদহের মোথাবাড়ি। অশান্তি চরমে ওঠে। দোকান এবং গাড়িতে ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। পাল্টা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়। ছটি মামলা রুজু করে পুলিশ। সেই ঘটনার জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অশান্তি ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় ৬১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এখনও পর্যন্ত ১৯টি মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও,রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম বলেন, ‘ঘটনা সামনে আসতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।’