সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“টেররিজ়ম একটি আইডেনটিটি। এরা বর্ন ইন ক্রিমিনাল। এদের কোনও ধর্ম, জাত হয় না। এদের ক্ষমাও করা যায় না। এরা একটা কাস্ট। কী হয়েছে, কেন হয়েছে, তা পরে দেখব। তীব্র নিন্দা করছি।” এভাবেই কাশ্মীরের পেহেলগাঁওতে পর্যটকদের উপরে নির্ভেজাল এগুলি চালিয়ে হত্যা করা জঙ্গিদের জাতি ধর্ম নির্বিশেষে তীব্র নিন্দা করে কঠোর শাস্তির দাবি করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কলকাতার বাসিন্দা মৃত বিতান অধিকারীর স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বেহালার বাসিন্দা যিনি পহেলগামের জঙ্গি হামলায় মারা গিয়েছেন, তাঁর দাদার সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান। সেই সঙ্গে শ্রীনগর থেকে বুধবার কলকাতার বাসিন্দাদের সমস্ত মৃতদেহ পৌঁছে গিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমরা এই জঙ্গি হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ক্যাবিনেট বৈঠকে আমরা নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। আমরা এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই। সন্ত্রাসবাদীরা জন্মগত অপরাধী।” তিনি জানান এই ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের সকলের পাশে রয়েছেন তিনি।
কাশ্মীরে একটা ধস নেমেছিল। সেখানে ২৬ জন পর্যটক আটকে পড়েছিল। তাদের সকলকে নিরাপদে উদ্ধার করা গেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার সব সময় কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছে।
২৬ জনকে খুন করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিল জেহাদিরা। লম্বা সময় ধরে চলেছে নারকীয় হত্যালীলা। ‘সেনসিটিভ’ সীমান্ত এলাকায় এমন হত্যালীলা চলল অথচ তার মধ্যে সেনা কেন পৌঁছল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তাঁর কথায়,”আমি বুঝতে পারছি না এতক্ষণ সময় লেগে গেল কেন? ওখানে তো অনেক আর্মি ছিল। বর্ডার এলাকা, সেনসেটিভ এলাকা। এসব নিয়ে এখন কথা বলব না।” পরিশেষে মমতা বলেন, “আমরা যেটা চাই যারা এটা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এর আগেও বুধবার সকালে এক্স হ্যান্ডেল এ কাশ্মীরের জঙ্গি হামলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “কাশ্মীরের এই অত্যন্ত দুঃখজনক হিংসাত্মক ঘটনায় আমাদের রাজ্যের ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁরা পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে কাশ্মীর গিয়েছিলেন। পর্যটনের আনন্দ নিমেষেই বদলে যায় মৃত্যু ও আতঙ্কের করুণ কাহিনীতে। দিল্লি বিমানবন্দরে রাজ্যের প্রশাসনিক টিম সব রকম সহযোগিতা করছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য। আজ সন্ধ্যা ৮টা ৩০ মিনিটে দেহ কলকাতায় পৌঁছনোর কথা। দিল্লিতে আমাদের রেসিডেন্ট কমিশনারের দফতর নিহতদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমি নিজে পুরো বিষয়টি তদারকি করছি এবং আমাদের সিনিয়র অফিসাররাও সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এটা আমাদের সকলের জন্য এক মর্মান্তিক মুহুর্ত। নিহতদের পরিবারের জন্য কোনও শব্দই যথেষ্ট নয়। আমার হৃদয় তাঁদের সঙ্গে, আমরা তাঁদের পাশে আছি।”