সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
ছাত্রসমাজের নামে ডাকা রাজনৈতিক পতাকা ছাড়া নবান্ন অভিযান নিয়ে বিজেপির মধ্যেই দ্বন্দ্ব চরমে। আর জি কর ইস্যুতে আগামী ২৭ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের নামে ডাকা হয়েছে নবান্ন অভিযান।
যে কর্মসূচির নেপথ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু চান পতাকা ছাড়া বিজেপির লোকজন ওই অভিযানে অংশ নিক।নিজেও থাকবেন বলে জানিয়েছেন। সেই মতো নিজের অনুগামী বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের ওইদিন পথে নামাতে চাইছেন শুভেন্দু।
কিন্তু এভাবে দলীয় পতাকা ছাড়া কোনও মিছিলে শামিল হতে এখনও নারাজ স্বয়ং রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দ্বিমত পোষণ করে সুকান্তর কথায়, “অরাজনৈতিক মিছিলে রাজনৈতিক লোকেদের একটু দূরে থাকাই উচিত। মিছিলে যাব কি না ঠিক করিনি।”
সুকান্ত শিবিরও বলছে, ওই আন্দোলন বিজেপির নয়। তাই কারও যোগদানের প্রশ্ন নেই। তবে যে কোনও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে দলের যে নৈতিক সমর্থন আছে তা অবশ্য বলেছেন সুকান্ত। ফলে ‘রংহীন’ নবান্ন অভিযানে সরাসরি গেরুয়া রং লাগাতে নারাজ সুকান্ত শিবির। শুভেন্দু বিরোধী বিজেপি শিবিরের যুক্তি, আর জি কর ইস্যুতে যা আন্দোলন হবে, দলের ব্যানারে হবে। ফলে এটা স্পষ্ট, শুভেন্দু বারবার ‘পতাকাহীন’ আন্দোলনের কথা বলছেন। কিন্তু তাতে কার্যত সায় নেই বিজেপির একটা বড় অংশের।পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের ব্যানারে বিজেপির ছদ্মনামে ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযানের দিন অশান্তি পাকানোর ছক স্পষ্ট বলে অভিযোগ শাসক দলের।
আর জি কর ইস্যুকে সামনে রেখে গত ১৮ আগস্ট মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গলের ডার্বি ম্যাচে সমর্থক সেজে অ্যাসিড বোমা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢুকে স্টেডিয়ামে গণ্ডগোল পাকানোর পরিকল্পনা ছিল একটি মহলের। কিন্তু পুলিশ আগাম খবর পেয়ে সেই ছক ভেস্তে দেয় রাজ্য প্রশাসন।
বামেদের একাংশও যোগ দিতে পারে গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিতে। বামেদের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করে এবিভিপি ও আরএসএসের ছদ্মনামের প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হচ্ছে এই কর্মসূচির।নবান্ন অভিযানের নামে ২৭ আগস্ট পথে নেমে রাম-বাম যৌথভাবে অশান্তি ও হিংসা ছড়ানোর চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূলও। কারণ, শুভেন্দু হুমকি দিয়ে বলেছেন, ”মুখ্যমন্ত্রী ২৬ তারিখ পদত্যাগ করুন, যাতে গুলি না চালাতে হয়।”
তবে শেষমেশ এই কর্মসূচি এড়িয়ে থাকার দাবি করছে বাম-সহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলি। ২৭ তারিখ বেলা ১টায় কলেজ স্কোয়ার ও হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে।