সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে শিয়ালদহ আদালতে জানাল সিবিআই।
শনিবার আদালতে পেশ করা হয় সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে। অভিজিৎ ও সন্দীপের আরও ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতের আবেদন জানানো হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয়েছিল সন্দীপকে। তারপর আরজি করে চিকিৎসক-পড়ুয়া খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে সিবিআই গ্রেফতার করে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে।
অন্যদিকে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীর খুন এবং ধর্ষণের মামলায় শনিবার রাতে গ্রেফতার হয়েছেন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। সিবিআই-এর দাবি, ধৃত তথ্যপ্রমাণ লোপাট-সহ বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত।
মঙ্গলবার আদালতে সিবিআই-এর দাবি, ” ধৃত দু’জনকেই আরও জেরা করা প্রয়োজন। এখনও তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। কল ডিটেলস খতিয়ে দেখা গিয়েছে, ঘটনার দিন, ৯ অগাস্ট চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে সন্দীপ ও অভিজিতের মোবাইলে সবচেয়ে বেশি কথাবার্তা হয়েছিল। এই ৩ দিনে আরও অনেক সন্দেহজনক মোবাইল নম্বর মিলেছে যাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ধৃতরা। টালা থানা থেকে সিসি ক্যামেরার যে হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করা হয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।”
বিচারক সিবিআই আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ” এই দু’জন কি খুন ও ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত?
নাকি প্রমান লোপাটের যড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত?” উত্তরে সিবিআই বলে, ” আমরা প্রত্যক্ষভাবে বলতে পারিনা এই দু’জন ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে সন্দীপ এবং অভিজিতকে আরও জেরা করা প্রয়োজন। তবে তাঁরা ধর্ষণের পর প্রমাণ লোপাটের ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।”
আদালতে অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবীর দাবি, ” কোন ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে? এই ৩ দিন কি করল? উনি তদন্তকারী অফিসার ছিলেন না। সহযোগী ছিলেন। তদন্তে যুক্ত থাকা সরকারি অফিসারকে পদ্ধতি মেনে গ্রেফতার করা হয়নি। সিবিআই বলছে এই ৩ দিনে আমার মক্কেলের ফোন নিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এটা নিয়ে জেরা করার জন্য গ্রেফতার করার কি প্রয়োজন?”
উত্তরে সিবিআই-এর দাবি, ” এই ৩ দিনে আরও অনেক সন্দেহজনক মোবাইল নম্বর মিলেছে। এই দু’জন ছাড়াও আর-ও অনেকের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। এরা জেরায় সহযোগিতা করছেন না, সদুত্তর দিচ্ছেন না। তাই আরও ৩ দিনের হেফাজত চাইছি।
বিচারক সিবিআই কে বলেন, ” আপনারা ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন। খুন ও ধর্ষণে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে? নাকি প্রমাণ লোপাটে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে?
এটা কিন্তু গুরুতর অভিযোগ
। আপনাদের কাছে কোনও তথ্য আছে যার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে ধৃতরা খুন ও ধর্ষণে যুক্ত? কোনও প্রমাণ থাকা দরকার। আপনারা কি এমন কিছু পেয়েছেন? যদি এরকম কিছু পেয়ে থাকেন তাহলে আলাদা Fir হয়নি কেন?”
সিবিআই বলে, হতে পারে এই ঘটনার আগে কোনো ষড়যন্ত্র হয়েছে। সন্দীপ ইচ্ছাকৃতভাবে এফআইআর করতে দেয়নি। কিন্তু তাই বলে ওসি এফআইআর করবেন না কেন? কে আটকেছে? এটা ষড়যন্ত্র।”