পুজোর দিনগুলিতে পুজোর যোগাড়ে ব্যাস্ত থাকায় শাড়ি গয়না পরতে পারতনা বাড়ির গৃহবধূরা। আর সেই কারণে দশমীর দিন মাকে বিদায় জানানোর আগে কানে কানে নিজেদের সেই মনের কথা শুনিয়েছিলেন উদয়নারায়নপুরের কুরচী গ্রামের মূর্খাজী পরিবারের গৃহবধূরা।
আর তার পূজো ছেড়ে বাড়ির বউরা গয়না পড়ার আবদারে উমা অভিমানে বেশ কয়েকবছর কুরচী গ্রামের মূর্খাজী পরিবারে পুজো না নিয়ে বিনোদবাটির মূর্খাজী পরিবারে পুজো নেওয়া শুরু করেছিলেন।
যদিও পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে কুরচী গ্রামের মুখার্জি পরিবারের লোকেরা পুনরায় বাড়িতে দেবীর আরাধনা শুরু করেছিলেন। কুরচীর মূর্খাজী পরিবার সূত্রে খবর তাদের এই পারিবারিক পুজো এইবছর ৩১৭ বছরে পদাপর্ন করল। যদিও দেবীর অভিমানের কারণে মাঝে ৩০ বছর পুজো বন্ধ ছিল। পরিবারের সদস্য শুভঙ্কর মুখার্জি জানান জন্মাষ্ঠমীর দিন পরিবারের প্রতিষ্ঠিত পুকুর থেকে মাটি তোলা হয়।
এরপর প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু হয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে পুজো করার পর দশমীর দিন বাড়ির প্রতিষ্ঠা করা পুকুরে প্রতিমা বির্সজন দেওয়া হয়। পুজোর দিনগুলিতে মাকে নানা পদে ভোগ দেওয়া হয়। আগে এই পুজোয় বলিদান প্রথা চালু থাকলেও বর্তমানে সেটা বন্ধ হয়েছে। শুভঙ্কর মূখার্জী জানান আমাদের পূর্বপুরুষ বনেদি পরিবার থাকায় মহিলাদের প্রচুর দামি দামি শাড়ি ও সোনার অলঙ্কার ছিল।
যদিও বাড়িতে দূর্গা পুজোর যোগাড়ের জন্য পুজোর দিন গুলিতে তারা সেইসব শাড়ি ও অলঙ্কার পরতে পারতেন না। যেটা নিয়ে তাদের মনে একটা আক্ষেপ ছিল। অতীতে একবার দশমীর দিন নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়ে মায়ের কানে নিজেদের মনের কথা শুনিয়েছিলেন পরিবারের মহিলারা। আর সেই অভিমানে নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের পর মায়ের মেড় আমাদের এখানে না থেকে পাশের গ্রাম বিনোদবাটীর মূখার্জী পরিবারের কাছে চলে যায়।
মা ওই পরিবারের সদস্যদের স্বপ্নাদেশ দিয়ে সেখানে তাদের বাড়িতে পুজো শুরু করতে বলেছিলেন। শুভঙ্কর বাবু জানান সেই বছরের সেই ঘটনার পর প্রায় ৩০ বছর আমাদের বাড়ির পুজো বন্ধ ছিল। পরে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে পুনরায় বাড়িতে পুজো শুরু করার জন্য প্রতিমা তৈরীর লক্ষ্যে বিনোদবাটীর মূখার্জী পরিবারের মেড় থেকে একটু খড় বাড়িতে নিয়ে এসেছিল।
যদিও বাড়িতে পুনরায় পুজো শুরু করার সময় আমাদের পরিবারে একাধিক বিপর্যয় নেমে এসেছিল। তবে সব বিপদ কাটিয়ে আমরা পুনরায় বাড়িতে ধুমধাম সহকারে মায়ের পুজো শুরু করেছিলাম। যেটা আজও চলে আসছে।