সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“মা সবাইকে ভাল রাখুন। অনেক মানুষ এখনও বানভাসি রয়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ান। যতটা পারবেন, সাহায্য করবেন। আমিও আমার মতো চেষ্টা করেছি। আমার দলের সহকর্মীরা সাহায্য করেছেন।” মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনায় বাংলার মানুষকে এভাবেই শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার নজরুল মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যার উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “যারা মানুষের সেবা করে, তারা কাজটা করে নিঃশব্দে। আর যারা কাজ করে না, তারা বকবক করে। বকে বেশি। আমি চাই, কথা কম, কাজ বেশি। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য থাকা উচিত।”
আরজি কর কাণ্ডের পর অনেকেই মন্তব্য করেন, পুজোয় আছি, উৎসবে নেই। এদিন কারও নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেকে বলেন, কেন পুজো করব? কেন উৎসব করব? আমাদের তো বারো মাসে তেরো পার্বণ। সব কাজ করি। উৎসব ও করি। সবাইকে নিয়ে চলার মধ্যে আনন্দ রয়েছে।” একইসঙ্গে পুজোর সময় শিশু-মহিলা ও প্রবীণদের খেয়াল রাখার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “প্রবীণদের, শিশুদের এবং মা-বোনদের একটু খেয়াল রাখবেন। যাতে কোনও অসুবিধা না হয়।”
দুর্গা পূজার শুভ সূচনা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী প্রকাশ করেছেন নতুন গানের অ্যালবাম ‘অঞ্জলি’। প্রতি বছরের মতো এবারও পূজার প্রাক্কালে এই বিশেষ অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র পত্রিকা ‘জাগো বাংলা’র শারদীয়া সংখ্যা প্রকাশের দিনে এই অ্যালবামের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। অ্যালবামটিতে মোট ১০টি গান রয়েছে। অবশ্য মমতা ব্যানার্জী নিজে গানগুলোতে কণ্ঠ দেননি। তবে তিনি প্রতিটি গান লিখেছেন এবং সুর দিয়েছেন। বাবুল সুপ্রিয়, নচিকেতা চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল সেন, রাঘব চট্টোপাধ্যায় ও অদিতি মুন্সির মতো পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় শিল্পীরা এসব গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এ পর্যন্ত মমতা ব্যানার্জীর লেখা ও সুরে গানের সংখ্যা ১৩০টি ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া সরকারি প্রতিটি প্রকল্পেও তার গান রয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। নতুন অ্যালবামের উদ্বোধন উপলক্ষে মমতা বলেন, এ বছর পূজার সংখ্যার প্রচ্ছদ করেছি। শারদীয় সংখ্যা তৈরি করতে গিয়ে আমরা এক পয়সার বিজ্ঞাপন নেইনি। আমাদের বারো মাসে তেরো পার্বণ। ধর্ম-কর্ম সব মানি। সবাইকে নিয়ে চলার মধ্যে একটা আনন্দ ও প্রাণ রয়েছে।
অন্যদিকে, শ্রীভূমির হাত ধরে মঙ্গলবার থেকেই কলকাতায় শুরু হয়ে গেছে দুর্গা পুজোর উৎসব। বুধবার হাতিবাগান, সেলিমপুর পল্লী, বাবুবাগান, ৯৫ পল্লী, যোধপুর পার্ক, চেতলা অগ্রনী-সহ একাধিক জায়গায় শুরু হয়ে গেল দুর্গা পুজো। পিছিনে নেই জেলাও। বুধবারই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কয়েক’শ পুজোর উদ্বোধন হল মমতার হাত ধরে। এদিন হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজো উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুজো তো বছরে একবারই আসে। আমরা যারা ধর্মকে মানি তারা মনে করি সব উৎসবই আমাদের প্রাণের উৎসব।”
পরে প্রতিবারের মতো মহালয়া তিথিতে বুধবার সন্ধ্যায় চেতলার অগ্রণী ক্লাবের পূজা মন্ডপে উপস্থিত হয়ে হাতে রং তুলি নিয়ে মায়ের চোখ রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র এবং এই পুজোর উদ্যোক্তা ফিরহাদ হাকিম।