সুমনা মিশ্র। কলকাতা সারাদিন।
বাল্য বিবাহ নিয়ে শুনানিতে বড় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের। বাল্য বিবাহ রোধে যে আইন রয়েছে তাতে বেশকিছু খামতি রয়েছে বলে উল্লেখ শীর্ষ আদালতের। বাল্য বিবাহ রোধের আইনে বেশকিছু বদল আনা দরকার বলেও মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার শুনানি শেষে এবিষয়ে জারি করা হয় গাইডলাইনও।
বাল্য বিবাহের (Child Marriage) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট নাবালক বা নাবালিকার জীবনসঙ্গী বাছার অধিকার (Right to choose Life Partner) কেড়ে নেওয়া হয় বলে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। কোনওরকম ব্যক্তিগত আইনের (Personal Law) ভিত্তিতে বাল্য বিবাহ রোধের আইনের অবমাননা করা যাবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ আদালতের।
দেশের অঙ্গ রাজ্যগুলিতে বাল্য বিবাহ রোধের আইনের (Child marriage prevention act) সঠিক ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে মামলা দায়ের করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শুক্রবার সেই মামলাই শোনে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের (CJI Chandrachur) নেতৃত্বে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে হয় শুনানি।
রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাবা মায়ের ইচ্ছার ভিত্তিতে নাবালক বা নাবালিকাকে বিয়ের পিঁড়িতে ঠেলে দেওয়ার অর্থ নাবালক-নাবালিকার জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া। রাজ্য প্রশাসনকে এব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। বাল্য বিবাহ রোধের আইনের লঙ্ঘন হলে তার উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। মোটা অঙ্কের জরিমানাও ধার্য করা যেতে পারে।
রাজ্যগুলিতে বাল্য বিবাহের ঘটনা বেড়েই চলেছে বলে উষ্মা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এদিন তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আলাদা আলাদা প্রত্যেক জনগোষ্ঠীকে বাল্য বিবাহ রোধের আইন নিয়ে অবগত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও এব্যাপারে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। গোটা জনগোষ্ঠী সচেতন হলেই বাল্য বিবাহের মতো ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
বাল্যবিবাহ রোধে কাউন্সেলিংয়ের উপর জোর আরোপের নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। জানান, সমাজের বঞ্চিত প্রান্তিক এলাকাগুলিতে বা যেখানে শিক্ষার অভাব রয়েছে, এমন জায়গাগুলিতে বিশেষ করে নাবালিকাদের কাউন্সেলিং করাতে হবে। একইসঙ্গে লাগাতার সচেতনতা অভিযান, অপরাধের গুরুত্ব ও কড়া শাস্তির বিধান সম্পর্কে সকলকে অবগত করার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।