কনিষ্ক সামন্ত। কলকাতা সারাদিন।
নন্দীগ্রাম ব্লকের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন নামে কোনও এক ব্যক্তির বাড়িতে নাকি নিয়মিত গোমাংস ভক্ষণ করতেন শুভেন্দু। এমনকী, সেই মাংস নাকি বাড়িতে পার্সেল করেও নিয়ে যেতেন তিনি। তৃনমূল মুখপাত্র ঋজু দত্তের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পালটা তাঁর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ‘দেখা হবে আদালতে’ বলে হুঙ্কার ছাড়লেন ঋজুও।
শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই প্রসঙ্গে একটি পোস্ট করেছেন ঋজু। তা থেকেই স্পষ্ট, ঋজুকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী। ঋজু তাঁর পোস্টের সঙ্গে তিন পৃষ্ঠার সেই আইনি নোটিশের ছবিও শেয়ার করেছেন।
সেই নোটিশের বিষয়বস্তু পড়ে বোঝা যাচ্ছে – এই ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ৩০ অক্টোবর আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীর একটি অনুষ্ঠানে। সংশ্লিষ্ট আইনি নোটিশে অভিযোগ করা হয়েছে, সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে ভিত্তিহীন নানা অভিযোগ করেছেন ঋজু। প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারীর সনাতন ধর্মের প্রতি আস্থা নিয়েও।
ওই আইনি নোটিশ অনুসারে, ৩০ অক্টোবরের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অতীতে গোমাংস ভক্ষণের অভিযোগ তোলেন ঋজু।
তিনি দাবি করেন, নন্দীগ্রাম ব্লকের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন নামে কোনও এক ব্যক্তির বাড়িতে নাকি নিয়মিত গোমাংস ভক্ষণ করতেন শুভেন্দু। এমনকী, সেই মাংস নাকি বাড়িতে পার্সেল করেও নিয়ে যেতেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ঋজু দত্তের এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ইচ্ছাকৃতভাবেই এই মিথ্যা দাবি করেছেন।
এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে আরও এক ব্যক্তির। ঋজুকে পাঠানো আইনি নোটিশ অনুসারে, সেই ব্যক্তির নাম শ্রী রামচন্দ্র মণ্ডল। ওই নোটিশে দাবি করা হয়েছে, শ্রী রামচন্দ্র মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেসের ভগবানপুর-১ ব্লকের সভাপতি।
অভিযোগ, রামচন্দ্র মণ্ডল তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে ঋজু দত্তের সংশ্লিষ্ট মন্তব্যটির ভিডিয়ো ক্লিপিং শেয়ার করেন। যার জেরে সেটি ভার্চুয়াল বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে।
এর প্রেক্ষিতে ঋজুকে পাঠানো আইনি নোটিশে শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, এই নোটিশ হাতে পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এমন ‘ভিত্তিহীন মন্তব্য’ করার জন্য ঋজু দত্তকে লিখিতভাবে এবং বয়ান রেকর্ড করে সংশ্লিষ্ট সোশাল মিডিয়ায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর পাঠানো ওই নোটিশের প্রাপ্তি স্বীকার করে তাঁর এক্স হ্যান্ডলে কার্যত রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে পালটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ঋজু। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থানে তিনি অটল থাকবেন। তিনি যা মন্তব্য করেছেন, তা প্রত্যাহারও করবেন না। ক্ষমাও চাইবেন না। এমনকী, তাঁকে এভাবে ভয় দেখানো যাবে না বলেও দাবি করেছেন ঋজু। সবশেষে তৃণমূলের এই যুব নেতা জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এ নিয়ে আদালতেই বোঝাপড়া করবেন তিনি।