সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“ওঁর পদত্যাগ চাইলে কার কাছে জবাব চাইবেন?” রাজ্যপালের সিভি আনন্দ বোসের এক্তিয়ার নিয়ে এবার প্রশ্ন তুললেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়। বললেন, “আমার তো মনে হয়, রাজ্যপালের বোঝা উচিত, তাঁর এক্তিয়ার কতটা।”
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর জওহরলাল নেহেরু জন্মদিন উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিধানসভা আসেন স্পিকার।
তিনি বলেন, “এক্তিয়ারের বাইরে দিয়ে কাজ করছেন। আমার তো মনে হয়, রাজ্যপালের বোঝা উচিত, তাঁর এক্তিয়ার কতটা। কেউ রাস্তাঘাটে কারও বিরুদ্ধে বলল, অনেকে তো বলছে, একে পদত্যাগ করতে হবে, তাকে পদত্যাগ করতে হবে। রাজ্যপাল ওমনি জানতে চাইবে, কেন পদত্যাগ করতে হবে বলল তদন্ত করুন। অনেকে তো রাজ্যপালেরও পদত্যাগ চেয়েছে। তাঁর পদত্যাগ চাইলে কার কাছে জবাব চাইবেন।”
প্রসঙ্গত, আরজি কার কাণ্ডে যাকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিস, চার্জশিটে সেই সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে সিবিআই-ও। সোমবার থেকে মামলার বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে শিয়ালদহ কোর্টে। এদিকে আরজি কর কাণ্ডের সময়ে কলকাতা পুলিস কমিশনার ছিলেন বিনীত গোয়েল। পরে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। শুনানির প্রথম দিনেই অভিযুক্ত সঞ্জয়ের দাবি, ‘বিনীত গোয়েল, ডিসি স্পেশাল আমাকে ফাঁসিয়েছে। আমি নাম বলে দিচ্ছি। ওরা সাজিশ করে আমাকে ফাঁসিয়েছে। ওরা জানে কেন ফাঁসিয়েছে’। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই আইপিএস অফিসার সম্পর্কে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের নাম না করে বিমান আরও বলেন, ”পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা অত্যন্ত ভাল অবস্থায় রয়েছে। বাংলার মানুষ দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকতে পারছেন। কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজের উদ্যোগেই আবাস প্রকল্প-সহ নানা প্রকল্পের অর্থ জোগাড় করছেন।”
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “স্পিকার তাঁর এক্রিয়ারের বাইরে গিয়ে রাজ্যপালকে নিয়ে মন্তব্য করছেন। যখন রাজ্যপালের স্বাক্ষরে রাজ্য পরিচালিত হয়, স্পিকার যে কথা বলেছেন, এই কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে কার্যত সাংবিধানিক ব্যবস্থা শুধু প্রশ্নচিহ্নের মুখে নয়, ভেঙে পড়েছে। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তারজন্য দায়ী তৃণমূল কংগ্রেস এবং স্পিকারও স্পিকার না হয়ে তৃণমূলের মতো আচরণ করছেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ক্ষেত্রে।”