শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
“মুখ্যমন্ত্রী সঠিক কথা বলেছেন। পুলিশ ও সিআইডি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু তাদের দুর্নীতি করতে বাধ্য করা হয়েছে।” ২০২০ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আজ নজিরবিহীন ভাবে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনার সঙ্গে পুলিশ অধিকারীদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন সরাসরি, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে আজ শুক্রবার শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী গতকাল যে কথা বলেছেন, তা অত্যন্ত অ্যালার্মিং। নিজের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই ২০২৫ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হোক।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল পুলিশের একাংশ সিআইডির প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। দুর্নীতির সঙ্গে পুলিশ ও সিআইডির একটা অংশ জড়িয়ে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই মন্তব্য করেন।
মুখ্যমন্ত্রী সঠিক কথা বলেছেন। পুলিশ ও সিআইডি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু তাদের দুর্নীতি করতে বাধ্য করা হয়েছে। এমন বক্তব্য রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে। ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে ১৬০০ কোটি টাকা তৃণমূল ঘরে তুলেছে। ডিয়ার লটারির প্রসঙ্গও তিনি আরও একবার উত্থাপন করেন। পশ্চিমবঙ্গে টেন্ডার দুর্নীতি চলছে। ট্যাব থেকে সাইকেল, সিসিটিভি ইনস্টলেশন থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। এই সব সংস্থা ইলেক্টোরাল বন্ডে টাকা দিয়েছে। এমনই অভিযোগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেইসব কোম্পানিকে ব্ল্যাকলিস্ট করে হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ইলেক্টোরাল বন্ডে নেওয়া টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হোক। তা না হলে ভারত সেবাশ্রম সংঘ, রামকৃষ্ণ মিশন প্রকৃতি সংস্থাকে সেই টাকা দিয়ে দেওয়া হোক। সেই কথাও দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, ‘ট্যাব জালিয়াতি বিষয় কোনও গ্যাং যদি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে থাকে, সেটা তৃণমূলের লোক বা শিক্ষা দফতরের লোক বা সেটা তাঁর অর্থ দফতরের লোক। এর সঙ্গে বিরোধীদের কোনও লেনাদেনা নেই । আর যদি ওঁর কাছে কোনও প্রমাণ থাকে, তাহলে উনি সেটা প্রকাশ করুন। যদি বিজেপির কেউ থাকেন তাহলে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। তৃণমূলের কেউ থাকলে তাঁদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হোক।’
নির্বাচনী বন্ডে তৃণমূল কংগ্রেস ১৬০০ কোটি টাকা পেয়েছে। যদি বৈধভাবে টাকা নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ফেরত দিন। সেই জোরালো দাবি তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পুলিশ কর্তাকে দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির থেকে নির্বাচনী বন্ডের টাকা সংগ্রহ করেছেন। সেই দাবিও করেছেন বিরোধী দলনেতা। বিধানসভার বাইরে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী নেতা।
তাছাড়া শনিবার রাজ্যের যে 6টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশ হবে তা নিয়ে সরাসরি মন্তব্যের পথে হাঁটলেন না শুভেন্দু ।