কনিষ্ক সামন্ত। কলকাতা সারাদিন।
তমলুক কার্ড ব্যাঙ্কের ভোটে ধরাশায়ী হল ভাজপা। খাতাই খুলতে পারল না সিপিএম। একচেটিয়া জয় ছিনিয়ে নিল তৃণমূল।
সমবায় ব্যাংকের মোট আসন সংখ্যা ৬৯ টি। যার মধ্যে তৃণমূল দখল করেছে ৫৬ টি আসন। বাকি ১৩ টি আসন গেছে বিজেপির ঝুলিতে।
বহিরাগত দুষ্কৃতী ঢুকিয়ে সন্ত্রাস চালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। তমলুক কার্ড ব্যাঙ্কের ভোটে ধরাশায়ী হল ভাজপা। খাতাই খুলতে পারল না সিপিএম।একচেটিয়া জয় ছিনিয়ে নিল তৃণমূল।
কড়া নিরাপত্তায় সকাল থেকে তমলুক কার্ড ব্যাংকের ভোটগ্রহণপর্ব চলে রবিবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত। তারপরেই গণনা পর্ব শুরু হয়। গণনায় দেখা যায় এই সমবায় ব্যাংকের নির্বাচনে সবুজ ঝড়ে ধরাশায়ী গেরুয়া শিবি। এই সমবায় ব্যাংকের মোট আসন সংখ্যা ৬৯ টি। যার মধ্যে তৃণমূল দখল করেছে ৫৬ টি আসন। বাকি ১৩ টি আসন গেছে বিজেপির ঝুলিতে।
রবিবার বিকেল হতেই একের পর এক ব্লকে তৃণমূলের জয়জয়কারের খবরে সবুজ আবিরে মেতে ওঠেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। মোট ১২টি ব্লকের দুটি ব্লক বাদ দিয়ে বাকি ১০টি ব্লকে জয় লাভ করেছে তৃণমূল।
যার মধ্যে পাঁশকুড়া ব্লকের ৫টি আসন, কোলাঘাট ব্লকের ৪টি আসন, শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ২টি আসন, তমলুক ব্লকের ৫টি আসন, মহিষাদল ব্লকের ৪টি আসন, সুতাহাটা ব্লকের ২টি আসন, হলদিয়া ব্লকের ২টি আসন, ময়না ব্লকের ১০ টি আসন, নন্দকুমার ব্লকের ১০ টি আসন এবং চন্ডিপুর ব্লকের ১১ টি আসনের সবকটি আসনেই জয়লাভ করে তৃণমূল।
এই ১০ টি ব্লকে খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। তবে নন্দীগ্রাম- ১ ব্লকের ৭ টি আসনের মধ্যে ৭ টিতেই জয়লাভ করেছে বিজেপি। অপরদিকে নন্দীগ্রাম- ২ ব্লকের ৭ টি আসনের মধ্যে ৬ টি পেয়েছে বিজেপি এবং একটি আসন পেয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তৃণমূলের উন্নয়ন এবং মানুষের পাশে থাকার কারণেই তৃণমূলের জয় হয়েছে বলে দাবি করেছে।
অন্যদিকে, সমবায় সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল নন্দীগ্রামে। বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, হাতাহাতি বাদ গেল না কিছুই। রবিবার বেলার দিকে এই ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় নন্দীগ্রাম ১নং ব্লকের কাঞ্চননগর গ্রামে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে পুলিশের সামনেই রীতিমতো বোমাবাজি চলতে থাকে।
এই ঘটনার জন্যে বিজেপি ও তৃনমূল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী। পুলিশের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। এই ঘটনার জেরে ভোট গ্রহণ বেশ কিছু সময়ের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। যদিও পুলিশের দাবী, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তমলুকের জনপ্রিয় এগ্রিকালচার সোসাইটির নির্বাচন আয়োজিত হচ্ছে জেলা জুড়ে। এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল ও বিজেপি। নন্দীগ্রামে এই সমবায়ের ৭টি আসন রয়েছে যেখানে সব মিলিয়ে ২২ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নন্দীগ্রামে এই সমবায়ের নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে ১নং ব্লকের কাঞ্চননগর হাইস্কুলে। সকাল থেকেই এই ভোটগ্রহণ ঘিরে চাপা উত্তেজনা ছিলই। তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াইয়ে চারিদিকে দলীয় পতাকায় ছেয়ে দেওয়া হয়।
তারই মাঝে ভোটগ্রহণ পর্ব বেশ কিছুক্ষণ চলার পরেই উত্তেজনা তৈরি হয়।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি ও তৃণমূলের লোকেরা বুথের আশেপাশে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে থাকে। এরপরেই আচমকাই শুরু হয়ে যায় ব্যাপক বোমাবাজি। দুই পক্ষ্যের মুহুর্মুহু বোমা ছোঁড়ার শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় ছুটে যায়।
বোমাবাজি কিছুটা থামলেও উত্তেজনার পরিস্থিতি থাকায় বহু ভোটার আর বুথ মুখো হতে চাননি। তবে নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশের কর্তাব্যক্তিরাও হাজির রয়েছেন। সেই সঙ্গে বিপুল পরিমানে পুলিশ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ঘটনায় তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই পরিকল্পিত ভাবে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা দেবপ্রসাদ মাইতি জানান, “আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। সেই সময় আচমকাই বোমা ছোঁড়া হল। অল্পের জন্য আমরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। কিছুটা দূরেই স্কুলের মধ্যে ভোট গ্রহণ চলছে। সেই নিয়েই হয়তো এত বোমাবাজি চলছে। এই ঘটনায় আমরা এলাকাবাসীরা রীতিমতো আতংকের মধ্যে রয়েছি”।