ঝাড়গ্রাম জুলজিক্যাল পার্কে নতুন অতিথি আসছে। ইতিমধ্যে বন দফতরের পক্ষ থেকে ওই পার্কে ব্রাজিল ও আফ্রিকার টিয়া, ডুয়ার্সের লেপার্ড নিয়ে আসা হয়েছে। পার্কের জলাশয়ে এবার কুমিরেরও দেখা মিলবে। শাল ও পিয়াল গাছের মাঝে নতুন এনক্লোজারে দুটো সাদা কাকাতুয়া আনা হয়েছে। নতুন অতিথিদের দেখতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া বন দফতরের ধবনী বিটে ঝাড়গ্রাম জুলজিক্যাল পার্ক গড়ে উঠেছে।
ঝাড়গ্রামবাসীর কাছে পার্কটি ‘ডিয়ার পার্ক’ নামেই পরিচিত। রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পর পার্কের সম্প্রসারণ করা হয়। পর্যটক টানতে পার্কে নতুন নতুন বন্য প্রাণীদের নিয়ে আসার উদ্যোগ শুরু হয়। পার্কে এখন চিতল হরিণ, সম্বর হরিণ, স্বর্ণমৃগ, নানা প্রজাতির পাখি, নীলগাই, তারা কচ্ছপ, গোসাপ, এমু পাখি, সজারু, নীলগাই, ভালুক, হায়না, নেকড়ে, সাপ, গন্ধগোকুল, বাঁদর, হনুমান, মদনটাক পাখি, বন-মুরগি, ময়ূর, কালিজ ও গোল্ডেন ফিজেন্ট ও চিতাবাঘ রয়েছে। জুলজিক্যাল পার্কের বন্য পশুপাখিদের দেখতে পর্যটকরা সারা বছর ভিড় জমান। শীতের মরশুমে ভিড় আরও বাড়ে।
ব্রাজিল ও আফ্রিকার টিয়া, কুমির, লেপার্ড ও কাকাতুয়া দেখতে পর্যটকদের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।পার্কের ভিতর ২০২৩ সালে ‘সেলফি জোন’ তৈরি করা হয়েছে। বন্যপশুদের শুশ্রূষার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পার্কের ভিতরেই ‘সৃষ্টিশ্রী’ নামে একটি বিপণন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ঝাড়গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতের তৈরি বাবুই ঘাসের ব্যাগ, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, পাথরের জিনিসপত্র ও নানা খাদ্য সামগ্রী এখানে পাওয়া যায়। পার্কের ভিতরে ফুলের বাগান ও ছাউনি দেওয়া বসার জায়গা রয়েছে।
ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, পার্কটি নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। চিতা রাখার এনক্লোজারের কাজ চলছে। পার্কের জলাশয়টি নতুনভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। দুটো থেকে তিনটে কুমির এখানে এনে রাখা হবে। কাকাতুয়া দু’টিকে নতুন এনক্লোজারে আনা হয়েছে। আশা করছি, ডুয়ার্সের চিতা, ব্রাজিল ও আফ্রিকা থেকে আনা টিয়া দেখতে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে।সেইসঙ্গে তিনি বলেন, পর্যটকদের আকর্ষণ করতে বন বিভাগ নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে।
সেগুলি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ঝাড়গ্রাম বনবিভাগ নতুন নতুন বন্য পশুপাখিদের নিয়ে আসার উদ্যোগ নিচ্ছে। খুবই প্রশংসাজনক উদ্যোগ। বেড়াতে আসা পর্যটকদের বড় অংশ জুলজিক্যাল পার্কে আসেন। পর্যটক যত বাড়বে, পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে।
ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা অনিমেষ রায় বলেন, স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছিলাম। দুটো কাকাতুয়া নতুন আনা হয়েছে দেখে ভালো লাগল। চিড়িয়াখানার পশু পাখিদের দত্তক নেওয়া যায় শুনে উৎসাহিত বোধ করছি। ময়ূর বা কোন পাখি দত্তক নেওয়ার কথা ভাবছি। পার্কটি যেভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে, তা প্রশাংসাজনক। এর জন্য বন বিভাগকে অবশ্যই সাধুবাদ দিতে হবে।