সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
নতুন বছরের শুরুতেই প্রশাসনিক বৈঠকে বড় ঝটকা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে জমি মাফিয়াদের নিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে দিলেন কড়া নির্দেশ। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সরকারি জমি জবর দখল হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। এমনকী সরকারি জমি দখল করে যারা বসে আছেন সেই তালিকা দ্রুত তৈরি করতে হবে।
এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিতে হবে। এমনকি ৬ মাসের মধ্যে জমি পুনরুদ্ধার করতে সময়সীমাও এদিন বেঁধে দিয়েছেন প্রশাসনিক প্রধান (Mamata Banerjee)। এই বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকেও কড়া বার্তা দেন। বলেন, ডিএম, এসপি থেকে থানার আইসি, ওসি সকলে সতর্ক থাকুন। কোনও ভাবেই জমি দখল বরদাস্ত করা হবে না। জমি দখলের] ক্ষেত্রে কোনও অফিসার কিংবা নেতা যদি জড়িয়ে থাকে তাদেরও ছাড়া হবে না বলেও এদিন স্পষ্ট হুঁশিয়ারি প্রশাসনিক প্রধানের। শুধু তাই নয়, বেআইনি নির্মাণ হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্ল্যাক লিস্ট করার নির্দেশ দেন তিনি। এক্ষেত্রে কোনও দল দেখা হবে না। আমি করলে আমাকেও করবে, প্রশাসনকে স্পষ্ট বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সরকারি জমি যেন দখল না হয়। তা হলে এসপি ও আইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন করে জমির জবরদখল বরদাস্ত নয়। কড়া অবস্থান মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবেই হোক এলাকা দখলমুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে ইডি, সিবিআইয়ের মতো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। ছয় মাসের মধ্য়ে নথি দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। জমির দখল রুখতে কমিটি গড়া হবে। ওই কমিটিতে নেতৃত্ব দেবেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আবাসন সম্পর্কিত সংস্থা ‘রেরা’-কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন করে জমি দখল মানা হবে না। কেউ এটা করলে সহ্য করা হবে না। এটা হলে আইসি, বিডিও, এসপিদের ছাড়া হবে না। অনেকে দীর্ঘ দিন ধরে সরকারি জমি দখল করে, ফ্ল্যাট করে বসে আছেন। তারপর তাঁরা চলে যাচ্ছেন। এঁদের যেখান থেকে পারো ধরে আনো। কারা জমির মিউটেশন দিল, তাদেরও শাস্তি দিতে হবে। জরিমানা করতে হবে। এটার জন্য একটা নীতি তৈরি করতে হবে। যাতে বসবাসকারীরা আইনি হতে পারেন। আমরা বসবাসকারীদের প্রতি মানবিক। কিন্তু যাঁরা ব্যবসা করে খেয়েছেন তাঁদের প্রতি নয়। ব্যাবসায়িকদের ১০০ শতাংশ জরিমানা দিতে হবে। কোনও নেতা যদি এর জন্য তাঁবেদারি করে, কাউকে ছাড়া হবে না। দোষটা হচ্ছে যে করেছে তার। যে জমির কাগজপত্র দিয়েছে দোষটা তার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও জানিয়েছেন, সরকারের দখল করা জমিতে বেআইনিভাবে ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে। তারপর সেই ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। কারা এর রেকর্ড বা মিউটেশনের অনুমতি দিচ্ছে? বাইরে চলে গেলে ধরে আনতে হবে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআইয়ের মতো সম্পত্তি ক্রোক করতে হবে।