শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“প্রসূতিকে মেরে ফেলেছে মমতা ব্যানার্জির দফতর, এই অন্যায়ের ক্ষমা নেই।” সোমবার বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন বিরোধী দলনেতা।
বিষাক্ত স্যালাইনের প্রয়োগে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। স্যালাইনকাণ্ডে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের তরফেই ক্ষমার অযোগ্য ত্রুটি হয়েছে বলে দাবি করলেন তিনি। গত বছরই স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থাকে কালো তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছে কর্ণাটক সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও বিষাক্ত স্যালাইন কীভাবে ব্যবহার হল তা নিয়েই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ শুভেন্দুর। স্বাস্থ্য দফতর দায়সারা ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “কর্ণাটক সরকার বলার পরেও রাজ্যের সরকার তিন সপ্তাহ পরেও সেভাবে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ২০২২ পর্যন্ত যে কোম্পানির টেন্ডার ছিল,তার ৬ মাস টেন্ডারের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সেটাও ক্ষমার অযোগ্য।”
শুভেন্দুর দাবি, গোটা ঘটনার নেপথ্যে বড় আর্থিক যোগ রয়েছে। ইডি মামলা হাতে নিলে আর্থিক তছরুপ ধরা পড়বে বলে বলে মত শুভেন্দুর। তিনি বলেন, আরজি করে যে দুর্নীতির তদন্ত সিবিআই করছে, দুর্নীতির সাপেক্ষে তার থেকেও অনেক বেশি বড় অপরাধ এই স্যালাইনকাণ্ডে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত।
শুভেন্দু বলেন, “প্রসূতিকে মেরে ফেলেছে মমতা ব্যানার্জির দফতর। এই অন্যায়ের ক্ষমা নেই।” গোটা ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের বিরুদ্ধে মামলা করার আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু। একই সঙ্গে ইডি এই ঘটনার তদন্ত করুক এমনও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট কথা, ওই প্রসূতি মারা যাননি, তাঁকে এই সরকার মেরে ফেলেছে! প্রসঙ্গত, স্যালাইন কাণ্ডে ভেন্টিলেশনে রয়েছেন আরও দুই প্রসূতি। একজন রয়েছেন আইসিসিইউতে। স্বাস্থ্য দফতরের ১৩ সদস্যের যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাঁদের প্রাথমিক তদন্ত করে অনুমান, রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনই এঁদের অসুস্থতার কারণ।
এদিন স্যালাইনকাণ্ডের পাশাপাশি মালদায় তৃণমূল নেতা খুন নিয়েও তৃণমূলকে নিশানা করলেন শুভেন্দু।
তিনি বলেন, “দুলালের খুনের জন্য পুলিশমন্ত্রী মমতা দায়ী। দুলাল সরকারের স্ত্রীয়ের সিবিআই তদন্ত দাবি করা উচিত। তৃণমূলের গুন্ডাদের হাতেই খুন দাপুটে নেতা দুলাল সরকার।” আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত চাওয়া উচিত বলে জানান শুভেন্দু। বাংলাদেশকেও ফের হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই জোরকদমে কাঁটাতার দেওয়ার কাজ চালাচ্ছে বিএসএফ। ভারতের কাছে উন্নতমানের ড্রোন আছে। তা দিয়েই মোক্ষম জবাব দেওয়া যাবে। ভাল উত্তর দেওয়া যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।