কুম্ভ মেলায় এই বছর মহা কুম্ভ! ১৪৪ বছর পর আসা ‘ত্রিবেণী যোগ’-এ অমৃতস্নান! আর এই পুণ্য স্নান করতে গোটা ভারত বর্ষ থেকে কয়েক কোটি মানুষ গেছে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনির বছর ৭৮-এর উর্মিলা ভুঁইয়াও।
সোমবার খড়গপুর থেকে দুই মেয়ে-জামাই, বউমা এবং এক নাতনিকে নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন প্রয়াগরাজে। কিন্তু বুধবার ভোরে ত্রিবেণী সঙ্গমের সামনে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট মতো দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ৩০ জনেরও বেশি। সেই তালিকায় রয়েছে বাংলার এই প্রৌঢ়। এর আগে প্রয়াগরাজে পদপিষ্ট হয়ে কলকাতার বৃদ্ধা বাসন্তী পোদ্দারের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছিল। এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর আসলো।
উর্মিলা ভুঁইয়ার বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শালবনি ব্লকের গোদাপিয়াশাল সংলগ্ন কাছারি রোড এলাকায়। সোমবার বিকেলে তিনি পরিবারের সঙ্গে রওনা দিয়েছিলেন প্রয়াগরাজে। সেখানে গিয়ে তিনি ও তার পরিবারের লোকেরা ভারত সেবাশ্রম সংঘে ছিলেন। কিন্তু পুণ্যলাভের আশায় তাঁর প্রয়াগরাজ যাত্রা যে কী বিপদ ডেকে আনবে তা কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করেননি।
উর্মিলা ভুঁইয়ার নাতি অভিজিৎ মাইতি বলেন, ‘মঙ্গলবার প্রয়াগরাজ স্টেশন থেকে নেমে পরিবারের সকলেই ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রমে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই রাত কাটান। ভোরে পুণ্যস্নানে বেরিয়েছিলেন ওঁরা। ওই হুড়োহুড়িতে হাতছাড়া হয়ে দিদা পড়ে যান মাটিতে, তবে তা যে এমনটা হবে তা ভাবিনি। দিদাকে সেই সময়ে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না।’
বুধবার প্রয়াগরাজে প্রয়াগরাজের মতিলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের মর্গে গিয়ে ওই প্রৌঢ়ার দেহ শনাক্ত করেন তাঁর নাতনি মৌমিতা ।
বৃহস্পতিবার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁর দেহ নিয়ে আসা হবে খড়গপুরে। তারপর সেখান থেকে শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে শালবনিতে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানান, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে, শালবনিতে নিয়ে আসার পর তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।
মৃতার ছেলে দুলাল ভুঁইয়া বলেন চরম অবস্থা জন্য ওই ঘটনাটি ঘটেছে। শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ, মেদিনীপুর এর বিধায়ক সুজয় হাজরা, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ সিংহ, রাজ্যের ক্রেতা ও সুরক্ষা দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো মৃতের পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানান এবং মৃতার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। যার ফলে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মৃতার পরিবারে ও এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।