সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
ট্যাব-কাণ্ডে হুলুস্থুল বেধেছিল রাজ্য জুড়ে। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রের সংখ্যা ছুঁয়েছে প্রায় ৩ হাজার। উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত কমবেশি ৪৮৯টি স্কুল অনলাইনে জালিয়াতির শিকার হয়েছে। সরকার ঠিক করেছে, ছাত্রদের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, এই জালিয়াতি চক্র নিয়ে তদন্তও চালিয়ে যাবে পুলিশ।
ট্যাবের টাকা গায়েবের পর এবার কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে সতর্ক নবান্ন। কন্যাশ্রী পোর্টাল দিয়ে সতর্ক রাজ্যের নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতর। কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পাঠানো নিয়ে ৬ দফা নির্দেশ জারি হয়েছে জেলায়-জেলায়। কন্যাশ্রী পোর্টাল-এর মাধ্যমে লগ-ইন করার জন্য ছয় দফার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অবিলম্বে প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড বদল করতে হবে, এমনটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতরের তরফে। পাশাপাশি আপডেট করতে হবে সফটওয়্যার। পোর্টালকে সমস্যায় ফেলতে পারে এমন কোনও বেআইনি সফটওয়্যার সিস্টেমে থাকলে তা অবিলম্বে মুছে ফেলতে হবে। প্রতিনিয়ত সিস্টেমের স্ক্যান করতে হবে। এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা হয়েছে নাকি তার রিপোর্টও দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতরের তরফে।
ট্যাব কেনার জন্য ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা করে দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু বিগত বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ আসছিল, অনেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টেই এই টাকা ঢুকছে না। প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় পূর্ব বর্ধমান জেলায়। অভিযোগ ওঠে, সেখানে সেখানে বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে।
বংলার একাধিক জেলা থেকে ট্যাবের টাকা গায়েব হওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। ছাড় পায়নি কলকাতাও। যাদবপুর, সরশুনা, জোড়াসাঁকো, গল্ফগ্রিন থানায় ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে না ঢোকার অভিযোগ দায়ের হয়। যাদবপুরের এক স্কুলের ১২ জন পড়ুয়া এবং ঠাকুরপুকুরের এক স্কুলের ৩১ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি, টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।
জেলায়-জেলায় ট্যাব-কেলেঙ্কারির তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই একাধিক শিক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন। হুগলির ‘বঞ্চিত’ পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ফের টাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর।
স্কুল পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা পাঠাতে সরাসরি পদক্ষেপ করছে দার্জিলিং জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস। দার্জিলিং জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, সেখান থেকে সরাসরি ট্যাবের টাকা ব্যাঙ্কে টাকা পাঠানো হচ্ছে। ব্যাঙ্ক থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।