ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী, বাংলাদেশ।
জামিনে মুক্তির পর কারাফটক থেকে ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরপরই কারাফটকেই তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এ সময় কারাফটকে তার উপর হামলার চেষ্টা করা হয়।
কালামাকে ডিবির গাড়িতে তোলার সময় তার জামিনে মুক্তির প্রতিবাদে ছাত্রদল, যুবদল ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ডিবি পুলিশের এক সদস্য বলতে থাকেন, ‘এটা পুলিশের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি।’ কালাম পুলিশের গাড়িতে উঠে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা গাড়িটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যান। দু’একজন ইটপাটকেলও ছোড়েন। এসময় গাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ সদস্যরা নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিলে দ্রুত গাড়িটি ডিবি কার্যালয়ে চলে যায়।
পরে জেলার মোহনপুর থানা পুড়ানোর নাশকাতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত বছরের ৩ আগস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কারাগারের সামনে থেকে আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। গত বছরের ৩ আগস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় মোহনপুর থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ ওনাশকতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাবেক এমপি আবুল কালামের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি মামলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায়। আর অপর মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনের। উচ্চ আদালত থেকে তিনি সব মামলার জামনি নেন। গত ২১ জানুয়ারি এ মামলাটি হয়।
এদিকে, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর বুধবার রাতে কারাগার থেকে মুক্তি পান। তার জামিন পাওয়ার খবর বিকেলেই জানাজানি হয়। এরপর বিকেল থেকেই কারাগারের বাইরের সড়কে অবস্থান নেন ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। কারও কারও হাতে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল দেখা যায়। বাইরে পুলিশ সদস্যরাও সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।
সরেজমিনে থেকে দেখা যায়, রাত আটটার দিকে কারাগারের ভেতরের প্রধান ফটক থেকে বের হন আবুল কালাম আজাদ। পরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে হেঁটে কারাগারের বাইরের প্রধান ফটকের কাছে আসেন তিনি। এরপর বাইরে অপেক্ষমান ডিবি পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। গাড়িতে তোলার সময় ছাত্রদল, যুবদল ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় ডিবি পুলিশের এক সদস্য বলতে থাকেন, ‘এটা পুলিশের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি।’ কালাম পুলিশের গাড়িতে উঠে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা গাড়িটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যান। দু-একজন ইটপাটকেলও ছোড়েন। এ সময় গাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ সদস্যরা নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিলে দ্রুত গাড়িটি ডিবি কার্যালয়ে চলে যায়।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন আবুল কালাম আজাদ। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে গত ২ অক্টোবর রাতে র্যাব-৪ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাবন্দী ছিলেন।