সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
রবিবার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জহর সরকার রাজ্যসভার পদ এবং দল থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর তারপরই জহর সরকারকে তুলোধনা করলেন লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়। জহর সরকার ইস্তফা দেওয়ার ঘটনায় তাঁকে তোপ দেগেছেন যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। কুণাল ঘোষও কড়া সমালোচনা করেছেন জহর সরকারের।
আজ জহর সরকার ইস্তফা দেওয়ার চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারপর থেকেই রাজ্য-রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। কারণ বিরোধীরা উৎসাহিত হয়ে এই ঘটনায় নানা মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। অধীর চৌধুরী থেকে সুজন চক্রবর্তী তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করেছেন। এই আবহে সাংসদ জহর সরকারকে ‘ব্যক্তিকেন্দ্রীক’ বলে কটাক্ষ করলেন বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তাঁকে টিকিট দেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়েও মুখ খুলেছেন।
সৌগত রায় বলেন, ‘এই ধরনের মানুষদের মনোনয়ন দেওয়াই ঠিক নয়।’ রাজ্যসভার সাংসদ করা হয়েছিল জহর সরকারকে। তৃণমূল কংগ্রেসের মনোনয়নে তা হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে দলবিরোধী মন্তব্য আগে করেছিলেন জহর সরকার। তখন তাঁকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। পরে সন্দেশখালি ইস্যু ঘুরে যাওয়ায় চুপচাপ হয়ে যান জহর সরকার। এবার আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে সাংসদ পদে এবং রাজনীতিতে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন জহর সরকার। তা নিয়ে সৌগত রায়ের বক্তব্য, ‘দলের প্রতি কোনও কমিটমেন্ট নেই। পাবলিকের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। ভাল কাজ করবেন ভেবে অন্য ক্ষেত্রের অনেককেই নিয়ে আসেন আমাদের নেত্রী। কিন্তু এঁদের কেউ কেউ ব্যক্তিকেন্দ্রিক। শুধু নিজের কথাটা ভাবেন। কোনও বিরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেই পালাতে চান।’
রবিবার দুপুরে ট্যুইট করে নাম না করেই জহর আর সুখেন্দুকে নিশানা বানালেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। এদিন তিনি লিখেছেন, ‘একজন ছেড়েছেন, আরেকজনও ছাড়ুন। স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে, যদি উল্টো দিকে সাঁতার কাটতে নাই পারলেন তাহলে মানুষ জন্ম বৃথা! যুদ্ধের সময় যারা পালায় কিংবা গা বাঁচিয়ে চলে, ইতিহাস তাদের লজ্জার নজরে দেখে।’ বার্তা পরিষ্কার। দল ছাড়ো। কারও নাম না করেই এই ট্যুইট করেছেন দেবাংশু। তবে বুঝতে অসুবিধা নেই যে দুইজনের কথা তিনি বলতে চেয়েছেন নিজ ট্যুইটে তাঁরা জহর আর সুখেন্দু।
জহরের ইস্তফা সম্পর্কে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, জহরবাবু একজন সিনিয়র, বিদগ্ধ মানুষ। ব্যক্তিগতভাবে আমরা তাঁর বিরোধিতা করব না। তাছাড়া আমার মনে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি যে শ্রদ্ধার জায়গা, সেটা তিনি ছিন্ন করছেন না।” কুণালের বক্তব্য, “জহরবাবু যে উদ্বেগের কথা বলছেন, সেই উদ্বেগের সঙ্গে তৃণমূলের অনেক সৈনিক একমত। দলের কাছে দৃশ্যমান, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ প্রত্যাশা করে। কিন্তু সেটা দলের অন্দরে থেকেও।”