সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। ২৪ এবং ২৫ তারিখ পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সব থেকে বেশি তীব্র ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা। ১০০ থেকে ১২০ কিমি বেগে ঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সাগরদ্বীপ এলাকায়। এরই কারণে বাতিল হয়েছে একাধিক ট্রেন। বাতিল হল একাধিক বিমান। বন্ধ থাকবে বিমানবন্দরও।
সময় যত এগোচ্ছে ততই শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। বিগত ছ’ঘন্টাও অনেকটাই শক্তি বাড়িয়েছে ডানা। আগামী বৃহস্পতিবার যখন ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আছড়ে পড়বে, তখন যাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়, তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। যার ফলে রাজ্য সরকার আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে।
এছাড়া উদ্ধারকারী দল মোতায়েন রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। এমনকী উড়ান পরিষেবাতেও জারি হয়েছে সতর্কতা। এছাড়া রেল পরিষেবাতেও বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। যার ফলে আগামীকাল থেকে শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখায় থাকবে ট্রেন চলাচল।
বুধবার শিয়ালদহের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম জানান, আগামী ২৪ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে বন্ধ থাকবে দক্ষিণ শাখায় শহরতলির ট্রেন। অর্থাৎ বারুইপুর, ক্যানিং লাইনের ট্রেন চলাচল আগামী ২৪ থেকে ২৫ অক্টোবর সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে এই ডানা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সবথেকে বেশি শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখাতেই পড়বে। সেই কারণে কোনও বিপদ যাতে না হয় সেই কারণেই আগামী ১৪ ঘন্টা পর্যন্ত বাতিল থাকবে কমপক্ষে ১৯০টি ট্রেন।
এছাড়া শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখাতেও একাধিক ট্রেন বাতিল থাকবে বলে জানা গিয়েছে। তবে যাত্রীরা ট্রেন ধরতে না পারলে বা দেরি করে স্টেশনে আসলে তাঁদের জন্য থাকবে বিকল্প ব্যবস্থা। ডিআরএম জানিয়েছেন, শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে খোলা থাকবে ওয়েটিং রুম। এছাড়া ছোট স্টেশনগুলিতে কোনও শেডের নীচে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেখানেও ওয়েটিং রুমে থাকার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেই আগে থেকেই স্টেশন লাগোয়া গাছগুলিকে ছেঁটে ফেলার কাজ শুরু করেছে রেলকর্মীরা। এছাড়া জমা জল যাতে দ্রুত কমানো যায় তারজন্য নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। ঘূর্ণিঝড়ের সময় আরপিএফের কর্মীরা মোতায়েন থাকবেন প্রতিটি রেল স্টেশনে।
বন্ধ থাকবে বিমানবন্দরও
ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাব এবার কলকাতা বিমানবন্দরে। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বৃহস্পতিবার ২৪ তারিখ সন্ধ্যে ৬টা থেকে ২৫ তারিখ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে । ঘূর্ণিঝড়ের কারণেই আগাম সতর্কতা হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
ঝড়ের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী বিমান পরিষেবা বাতিল করা ছাড়া আর অন্য কোনও উপায় নেই বলেই দাবি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। এছাড়াও সিদ্ধান্ত হয়েছে ঝড় যদি তীব্র আকার নেয় তখন রানওয়ে থেকে বিমানগুলিকে হ্যাঙ্গারে নিয়ে আসা হবে সুরক্ষাজোনে। আর ঝড় চলাকালীন রানওয়েতে যাতে কোনও কর্মচারী না থাকে তার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টির হলে বিমানবন্দরে জল জমে যাবে।
তাই অতিরিক্ত পাম্প কাজ করানোর নির্দেশ জারি হয়েছে। সিআইএসএফ ও নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া কলকাতা পুরসভার কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বুধবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত এই নির্দেশিকা জারি থাকবে। আর ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে কন্ট্রোল রুম।