সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের মাঝেই ফের এক বিস্ফোরক অডিয়ো ক্লিপ (যদিও অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি সকালের শিরোনাম ) প্রকাশ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের। তাঁর দাবি, চিকিৎসকদের একটা অংশ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতেই চাননি। কুণাল অবশ্য অডিয়োর কথোপকথনে থাকা কোনও চিকিৎসকের নাম প্রকাশ করেননি।
শুধু ক্যাপশনে তিনি লেখেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাওয়ার আগে ধরনামঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের অংশ। এটাও লাইভ হলে জনগণের বুঝতে সুবিধে হত। স্পষ্ট, একাংশ জটিলতার মানসিকতা নিয়েই গিয়েছিল। এই অডিও কারও টেলিফোনের কথোপকথন নয়। এটি ওঁদের মঞ্চে নিজেদের বৈঠকের আলোচনা।’
অডিও-টিতে একাধিক কণ্ঠস্বর রয়েছে। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এর মধ্যে একপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। অন্যপক্ষ যেততেন প্রকারেণ বৈঠক ভেস্তে দিতে চেয়েছিলেন। সেই উদ্দেশ্য পূরণ করতে লাইভ স্ট্রিমিং-এর দাবি স্রেফ অজুহাত মাত্র। আর এর নেপথ্যে রয়েছেন বেশ কিছু অতি বাম চিকিৎসক। অন্যপক্ষ বৈঠকে বসতে রাজি ছিলেন। সমাধান সূত্র খুঁজতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার পরও কর্মবিরতির পথ থেকে সরে আসেননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। এর পর যদিও সুপ্রিম কোর্ট কড়া পদক্ষেপ নেয়, তাহলে দায় ‘জেদি’ ডাক্তারদেরই নিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ডাক্তারদের একাংশ।
কী শোনা যায় প্রকাশিত সেই অডিয়ো ক্লিপে:
অডিয়োতে একজনকে বলতে শোনা যায় – কম করে ১৮-২০ জনকে কনট্যাক্ট করা হয়েছে। ৪ জন গিয়ে দিল্লিতে বসে আছে। আর কি জানতে চাস বল? লোখ ওখানে আইনজীবী খুঁজছে। কথা বলছে মিটিং করছে।
এরপর অপর একজনকে বলতে শোনা যায় – তুমি ভয় পাচ্ছ যে সুপ্রিম কোর্ট যদি আমাদের বিরুদ্ধে স্টেপ নেয় তাহলে ‘মাস’ আমাদের সঙ্গে থাকবে কি থাকবে না।
এরপর প্রথম ব্যক্তি ফের বলেন – সেদিন তো সুপ্রিম কোর্ট বলেনি যে সঙ্গে সঙ্গে কাজে যোগ দিতে হবে। ৯ তারিখ সুপ্রিম কোর্ট তোকে বলেছে (কাজে ফিরতে বলা হয়েছিল, নয়ত সরকার পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে জানানো হয়েছিল) তারপর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সব খেলছে। এরপর আজ তিনি মঞ্চে এসেছেন। এরপরও তুই যদি বলিস যে না আমি আমার জায়গা থেকে নড়ব না। যেমন আছি, তেমনই থাকব… তবে যদি আলোচনায় বসি তাহলে কর্মবিরতি ডিফেন্ড করা যাবে। যে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে। তখন তাও ডিফেন্ড করা যাবে নয়ত কিন্তু করা যাবে না।
জবাবে দ্বিতীয় ব্যক্তি বলেন – সুপ্রিম কোর্ট আমাদের বিরুদ্ধে ১৭ তারিখ পদক্ষেপ করতে পারে, সেটা আমরা ভাবছি। এরকম না যে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে সেটা আগের শুনানিতে আমাদের বলেছে। সুপ্রিম কোর্ট আমাদের কাজে ফিরতে বলেছে। কাজে না ফিরলে আমাদের বিরুদ্ধে রাজ্য পদক্ষেপ করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলেনি। আমরা ভাবছি যে সুপ্রিম কোর্ট চার্জ করতে পারে।
এরপর সেই প্রথম ব্যক্তি বলেন – ‘মাস’ কি এটা বুঝতে পারছে যে এর আগে সরকার তিনটে ইমেল লিখেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মঞ্চে এলেন, সেগুলি কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টে বলবে। এরপর ২৩ জনের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে দিয়েছে। সেটাও আদালতে যে পেশ করা হতে পারে। তোকে… এই যতগুল ছেলের শাস্তি হবে, সেই দায়িত্ব তোকে নিতে হবে। কেন নিতে হবে না? তুই তো আলোচনার জায়গায় যেতেই যাস না। কি কি বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, সেটা বলে রাখা আমার দায়িত্ব।