সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
গান শেখানোর নাম করে নাবালিকা ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ সঙ্গীত শিল্পী সঞ্জয় চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। বাংলা গানের জগতের পরিচিত নাম সঞ্জয়, সম্পর্কে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ভাই তিনি। মুম্বইয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন অভিযুক্ত, সেখানে গিয়ে তাকে গত রবিবার পাকড়াও করে চারু মার্কেট থানার পুলিশ। এরপর তাঁকে ট্রান্সজিট রিম্যান্ডে কলকাতায় আনা হয়। বুধবার রাতে ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য বাংলা গানের জগতে। অভিযুক্ত সঞ্জয় চক্রবর্তীকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁকে আগামী সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
নাবালিকা ছাত্রীকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত, সুতরাং সঙ্গীতশিল্পীর বিরুদ্ধে শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন (পকসো)-এ মামলা রুজু করেছে চারু মার্কেট থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, অজয় চক্রবর্তীর ভাই তথা কৌশিকি চক্রবর্তীর কাকা একটি গানের স্কুল চালান। সেখানকারই এক ১৬ বছরের ছাত্রীর সঙ্গে কুকর্ম করার চেষ্টা চালান সঞ্জয় বলে অভিযোগ। এরপর গত ২৯ অগস্ট বেলঘরিয়া থানায় সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনে ‘জিরো এফআইআর’ করেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা-মা।
এরপর সংশ্লিষ্ট থানা ঘটনাস্থল যে থানার আওতাধীন, সেই চারু মার্কেট থানায় পাঠিয়ে দেয়। লালবাজার সূত্রে খবর, রবিবার মুম্বইয়ের আকুরলি রোড থেকে সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডের মাঝেই আরও এক সঞ্জয়ের কীর্তিতে হতবাক সকলেই! নারীর স্বাধীনতা, আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে পথে নেমেছিল বাংলার শিল্পী মহল। পিছিয়ে ছিলেন না কৌশিকি চক্রবর্তীও। এবার তাঁর ঘরের লোকের বিরুদ্ধেই যৌন হেনস্থার অভিযোগ। এবার এই ঘটনা নিয়ে ফুঁসলেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। তিনি সরাসরি একহাত নেন অরিজিৎ সিং, শ্রেয়া ঘোষালদের মতো তারকাদের। যাঁরা আরজি করের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন।
ফেসবুক পোস্টে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ভাই সঞ্জয় চক্রবর্তীকে মুম্বাইতে আরেক গায়ক এর ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার। নাবালিকাকে গান শেখানোর নাম করে শারীরিক নির্যাতন এর অভিযোগ। ১৮ তারিখ (নভেম্বর) অব্দি পুলিশ হেফাজত। মুম্বাই থেকে অরিজিৎ, অভিজিৎ, শ্রেয়া, সকলেই আশা করি বাংলার মুখ উজ্জ্বল করা এই ঘটনাটি নিয়ে বিবৃতি দেবেন এবং একটি করে গান শোনাবেন।’
আরজি কর নিয়ে গান বেঁধেছেন অরিজিৎ, শ্রেয়ারা। সেই নিয়ে বিদ্রুপ করে কুণাল লেখেন, ‘অরিজিৎ… আর কবে… মুম্বাই কিংবা হিন্দি বলয়ের কুকর্ম নিয়ে গান হবে… আপনারা কি সিলেক্টিভ বিপ্লবী? বাংলায় কিছু ঘটলে জাগেন, আপনাদের কর্মক্ষেত্রের সর্বভারতীয় জগতে হলে ঘুমান। জাগবেন???? আর কবে????’
এর আগে আরজি কর কাণ্ড প্রসঙ্গেও সরাসরি অরিজিত্, শ্রেয়াদের নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন কুণাল। শ্রেয়ার প্রশংসা করলেও অরিজিতের চুপ থাকা নিয়ে তাঁকে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন তিনি।
সে সময় তিনি লিখেছিলেন, “অরিজিৎ সিং অপূর্ব গায়ক। ছেলেটিও ভাল। তিলোত্তমার ন্যায়বিচার চেয়ে গানটি যথাযথ। সমর্থন করি। কিন্তু সমস্যা হল বিবেক জাগে শুধু বাংলায়। মহারাষ্ট্রের বদলাপুর নিয়ে হিন্দিতে গান হয় না। বা সাক্ষী মালিকদের নিয়ে। কারণ, ওটা মূল কর্মক্ষেত্র, হিন্দিজগৎ, কাজ, টাকা, কেরিয়ার, তাই চুপ?” কুণালের মন্তব্যের পরেই অবশ্য নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে নিজের মতামত দেন গায়ক।