সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার ছয় কেন্দ্রের উপনির্বাচনের রং সবুজ। বাংলার হাফ ডজনে সাধারণ মানুষের পছন্দ তৃণমূল। লোকসভা ভোটের ফলাফল মানুষকে অবাক করে দিয়েছিল। যদিও সেই ফলাফল নিয়ে আশাবাদী ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্বরা। কিন্তু আর জি কর আবহে তৃণমূলের উপনির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানান জল্পনা।
ছয় কেন্দ্রে বিধানসভার উপনির্বাচনের ফল দেখে আপ্লুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দুপুরের মধ্যে উপনির্বাচনের ফল পরিষ্কার হওয়ার পরেই সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মেঘালয়ের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্ট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে বিরোধীদের ‘জমিদার’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে পোস্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে মা-মাটি-মানুষকে জানাই প্রণাম। আপনাদের এই আশীর্বাদ আমাদের আগামীর চলার পথে আরও সক্রিয় ভাবে মানুষের কাজ করার উৎসাহ দেবে।” ‘জমিদার’ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে মমতার বক্তব্যে। তৃণমূল অনেকবার বিজেপিকে ‘জমিদার’ বলে কটাক্ষ করেছে। ছয়ে ছয় হওয়ার পর মমতা বলেছেন, “আমরা জমিদার নই, মানুষের পাহারাদার।”
পোস্ট করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, “আমরা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। নতমস্তকে প্রণাম জানাই। আমাদের দায়বদ্ধতা আরও বাড়ল। আমরা আরও বেশি করে বাংলার মানুষের পাশে থাকব। উন্নয়নে বাংলাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।” ২০২৬-এ বিধানসভা নির্বাচন। এবার সেই লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপিকে কটাক্ষ করে কুণাল লেখেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছেন ওঁরা ২০২৬-এ ক্ষমতায় আসবেন। ওঁরা ৩০২৬এও পারবেন না। কারণ ওঁরা বাংলার মানুষের জন্য কোনো কিছু করেননি।”
আরজি করের ঘৃণ্য ঘটনার পর সমাজের নানা স্তরে প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছিল, একই সঙ্গে ‘ফেক নিউজ’ বা ‘তৈরি’ অডিও-রও রমারমা তৈরি হয়েছিল। সেই সূত্রেই সামনে এসেছিল ‘আমি সোমা বলছি…’ শীর্ষক একটি ভাইরাল অডিও। যদিও পরে একপ্রকার প্রমাণিতই হয়ে যায়, ওই অডিওটি ছিল ‘তৈরি’ করা। এবার বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোতেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সেই অডিও-র প্রসঙ্গ এনে তুলোধনা করলেন বিরোধীদের।
শনিবার কুণাল ঘোষ বলেন, “নমস্কার বন্ধুরা আমি সোমা বলছি। বিপুল চক্রান্ত আর কুৎসা সত্ত্বেও ছয় আসনে তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছে। তালে তালে গালে গালে স্লোগান দিয়েছিলাম। অরিজিত সিংয়ের গানে তাল দিয়েছি, আর কবে? আর কবে? সিপিএম শূন্য থেকে কবে এক হবে?”
এরপরই আরজি কর কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে কুণাল বলেন, “আরজি করে অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে। আমরাও শাস্তি চাই। কিন্তু মিথ্যাচার, কুৎসার বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি। বিরোধীরা যে ন্যারেটিভ তৈরি করতে গিয়েছিল, তা মানুষ হতে দিল না। তাই বিপুল ভোটে জয়। আরজিকর’কে কেন্দ্র করে বামেরা যা শুরু করেছিল, সেই কারণেই বামেদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে সব আসনেই। এরা মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন। প্রথম হওয়া দূরের কথা, এরা প্রার্থী খুঁজে পায় না। আজ সিপিএমের বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত, একটা রাজ্য সম্পাদক চাই। আর অরিজিত সিংয়ের গানটা করুন আর কবে? আরজি করকে কেন্দ্র করে যারা কুৎসার রাজনীতি করেছে, এবার ভেবে নিন, (সুর করে) চক্রান্তকারীর গালে গালে, কুৎসাকারীর গালে গালে, মিথ্যাচারীর গালে গালে, বাকিটা শূন্যস্থান পূরণ করে নেবেন।”