সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
এই পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে আমার দৃঢ় অঙ্গীকার। শুধুমাত্র কবিতায় নয় বাস্তবেও বাংলাকে নবজাতক প্রতিটি শিশুর কাছেই নিরাপদ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগুলো রাজ্য সরকার। রীতিমতো নজির তৈরি করে চলতি বছরে শিশু শ্রমিক শূণ্য রাজ্য হিসেবে উঠে এলো বাংলা।
শিশু শ্রম নিয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে মন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, এ রাজ্যে ২০২৪ সালে শিশু শ্রম শূন্যে নেমে এসেছে। রাজ্যে আর একজনও শিশু শ্রমিক নেই। এ বিষয়ে অবশ্য তিনি স্পষ্ট করে দেন, কারা শিশু শ্রমিক আর কারা নয়। মলয় ঘটকের কথায়, যে শিশুরা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, তারা ‘শ্রমিক’ নয়। এছাড়া ছোটরা যদি পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত থাকে, তাহলে তাদেরও শ্রমিক বলা যায় না। কী কারণে এত উন্নতি? সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মলয় ঘটকের বক্তব্য, সবুজশ্রী, কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর মতো প্রকল্প তো আছেই। তার উপর নিয়মিত মিড ডে মিল। এসবের সুবিধা পেয়ে এখন বহু দরিদ্র পরিবার সন্তানদের আর কাজে পাঠাচ্ছে না, স্কুলেই পাঠাচ্ছে। পরিসংখ্যান দিয়ে মন্ত্রী আরও জানান, কেন্দ্র ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত শিশু শ্রমিক রুখতে প্রকল্প চালিয়েছিল। কিন্তু তা বন্ধ করে দেয়। কেন্দ্রের আওতায় স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য ২৯০ টি কেন্দ্র ছিল, তাতে ১১,১২১ শিশু শিক্ষা পেয়েছে। সে বছর ১৪ জন শিশুশ্রমিক ছিল। ২০২১এ ৬, ২০২২ সালে ৩ এবং ২০২৩ সালে মাত্র ১ জন শিশু শ্রমিক ছিল রাজ্যে। আর ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা শূন্য। যা অত্যন্ত সুখবর। বিধানসভায় এসব তথ্য পরিসংখ্যান পেশ করে মন্ত্রী মলয় ঘটক বাকি মন্ত্রীদের কাছে আবেদন জানান, শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে পথে নামতে হবে।
শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটকের পাশাপাশি নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বিধানসভায় জানালেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় আসছে আরও ৫ লক্ষ মহিলা। শুক্রবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। জানতে চাওয়া হয় এই প্রকল্পের সুবিধা পান কতজন, তার জন্য খরচ কত। সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শশী পাঁজা জানান, ”মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন করে ৫ লক্ষ ৭ হাজার ২ জন মহিলার নাম ডিসেম্বর মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ২৫ থেকে ৬০ বছরের মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যে ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৭৫ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পেয়েছেন। এই মহিলাদের অনুদান দিতে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে ১৩,৫২৩.৮৮ কোটি টাকা।”