ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী, বাংলাদেশ।
রাজশাহী জেরার তানোরে বাস শ্রমিকদের উপর হামলাকারী সিএনজি শ্রমিকদের গ্রেপ্তার, শাস্তি ও সিএনজি চালানোর নীতিমালা প্রনয়নের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকাসহ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ আছে। বাস শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি মানা না পর্যন্ত অনিদিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহীর শিরোইল বাস কাউন্টারগুলোর সামনে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে অনেকের আগের টিকিট কাটা ছিল। কেউ কেউ গন্তব্যে রওনা দেওয়ার জন্য এসে দেখছেন বাস চলাচল বন্ধ।
নিশা আক্তর নামের এক যাত্রী জানান, তিনি ঢাকা যার উদ্দেশ্যে সকালে সিরলের বাস কাউন্টার এসেছিলেন। এসে দেখেন, কাউন্টার খোলা আছে তবে টিকিট বিক্রি বন্ধ। কখন বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে তা জানানো হয়নি। তবে বাসের টিকিট কাউন্টারগুলো থেকে জানানো হচ্ছে, গতকাল থেকে তাদের বাস বন্ধ রয়েছে। এখনও বাস ছাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
রাজশাহী পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল জানান, রাজশাহী-তানোর রুটে সিএনজি চালানো নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে তাদের দ্ব›দ্ব দীর্ঘদিনের। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) তানোরে সিএনজি শ্রমিকদের হামলা ও মারধরে ৬ জন বাস শ্রমিক আহত হয়। এর জের ধরে দুপুরের পর থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিক ও শ্রমিকরা।
বাস মালিক ও শ্রমিকরা জানান, রাজশাহীতে বিআরটিএর অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে শতাধিক সিএনজি চলাচল করছে। এবিষয়ে বাস মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একাধিক বার অভিযোগ করা হয়। তবে পুলিশ এনিয়ে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ বাস যাত্রীরা। যাত্রীরা বাস টার্মিনালে এসে বিপাকে পড়ছেন। অনেকেই বিকল্প যানবাহনে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের এখনও কন্ট্রোল করতে পারিনি। কিভাবে কন্ট্রোল করব বলেন, আমাদের সাত থেকে আটজন শ্রমিক হাসপাতালে রয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।
দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমন হতে পারে তারাই এ ঘটনা ঘটে আমাদের ওপরে চাপাচ্ছে।
তিনি বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু না হলে তারা বাস চালাবে না। একই সাথে তানোর সহ সব রুটে সিএনজি চলাচলের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চান বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
প্রসঙ্গত, রাজশাহীর তানোর উপজেলায় দুটি বাসের চালক ও হেলপারকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর ১টার দিকে শ্রমিকরা রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনালে যাত্রীবাহী বাস সড়কে রেখে অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে রাজশাহীতে থেকে আর কোনো রুটে যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। এর আগে একই দিন বেলা ১১টার দিকে তানোর উপজেলার মণ্ডমালা সড়কের মারধর করে। এতে অন্তত পাঁচজন বাস শ্রমিক আহত হন। আহতরা হলেন, স্বপন আলী, বাবর, শাহীন, নুরুজ্জামান ও কন্ডাক্টর জিয়া। এই মারধরের জেরেই রাজশাহী থেকে আন্তঃজেলা রুটের বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।