সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের রসিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংলাদেশি তৃণমূলি পঞ্চায়েত প্রধান লাভলি খাতুনের ওবিসি সার্টিফিকেট প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। লাভলির নাগরিকত্ব চ্যালেঞ্জ করে ওই পঞ্চায়েতেরই পরাজিত প্রার্থী আবেদনের ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশে মহকুমাশাসক লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
এর ফলে লাভলির পঞ্চায়েতের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। যার ফলে তাঁকে হারাতে হবে পঞ্চায়েত প্রধানের পদও। উপরন্তু ঘাড়ের ওপর ঝুলছে গ্রেফতারির খাঁড়া।
২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতে হরিশ্চন্দ্রপুরের রসিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হন লাভলি খাতুন। এর পরই অভিযোগ ওঠে তিনি বাংলাদেশি। এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী। সেই মামলায় বিষয়টি শুনানি করে নিষ্পত্তি করতে মহকুমাশাসককে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
এর পর প্রকাশ্যে আসে, তাঁর আসল নাম নাসিয়া শেখ। বাবার নাম জামিল বিশ্বাস। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ভারতে অনুপ্রবেশ করেন লাভলি। ২০১৫ সালে তাঁর নাম ভোটার তালিয়া ওঠে। ২০১৮ সালে ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট জোগাড় করে ফেলে সে। এর পর স্থানীয় বাঘমারা এলাকার শেখ মুস্তাফা নামে এক ব্যক্তিকে নিজের বাবা পরিচয় দিয়ে নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করে সে।
ওদিকে বাঘমারা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, শেখ মুস্তাফার সমস্ত সন্তানদের চেনেন তাঁরা। লাভলি খাতুন নামে ওই ব্যক্তির কোনও সন্তান নেই। যে ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসাবে উল্লেখ করে হাইকোর্টে হলফনামা পেশ করেছেন লাভলি তারা জানিয়েছেন তাঁদের সই জাল করা হয়েছে। তাঁদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।
সেই ঘটনায় অবশেষে লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। এর ফলে তাঁর পঞ্চায়েতের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত প্রধানের পদও যাবে তাঁর।
ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের কথা স্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘এর পর কী হবে সেটা প্রশাসন দেখবে। প্রশাসন পঞ্চায়েতের দায়িত্ব নেবে না উপপ্রধানকে দায়িত্ব দেবে সেটা বিডিও ঠিক করবেন।’