শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
“শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় না থাকলে আমি বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব পাকিস্তানে মার খেয়ে পিঠ বাঁচাতে বাঁচাতে উদ্বাস্তু হয়ে মোঘলসরাই বা কোনও বস্তিতে স্থান নিতাম।” বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসে শ্যামাপ্রসাদের গুরুত্ব তুলে ধরে এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
আজ বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিজেপির মুরলীধর সেন স্ট্রিটের পার্টি অফিস থেকে হিন্দুত্বের পক্ষে আরও একবার সওয়াল করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি সাংসদের দাবি, বাঙালিকে বুঝতেই দেওয়া হয়নি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কী রোল ছিল, কেন পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠা হল।
অতীতের ইতিহাসও এ দিন তুলে ধরেছেন সুকান্ত। বলেন, “আমাদের যোগেনচন্দ্র মণ্ডল জিন্নার মন্ত্রীসভায় আইনমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেই সময় বলাও হয়েছিল মুসলিম আর দলিতরা কাঁধে কাধ মিলিয়ে বন্ধুত্ব করে থাকব। কী হল উচ্চবর্ণের হিন্দুরা পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে এখানে চলে এল। ভোলাদ্বীপে তফশিলি নারীরা ধর্ষিত হলেন। যোগেনবাবু পালিয়ে আসেন মন্ত্রীত্ব ছেড়ে।”
সুকান্তর অভিযোগ, বাঙালিকে শিখতে দেওয়া হয়নি যোগেনবাবুর বিষয়ে। তাঁর দাবি, যোগেনবাবুর রেজিগনেশন লেটার স্কুলে স্কুলে পড়ানো দরকার। তাঁর জীবনি পুরো ইতিহাস থেকে হাওয়া। তিনি আরও বলেন, “অদ্ভুত ইতিহাস আমাদের। আমি তো ক্লাস টেন অবধি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইতিহাস পড়েছি। যোগেন মণ্ডলের নামই জানতাম না আমি। পরে বড় হলাম বই পড়তে শুরু করলাম জানলাম ওঁর নাম। বাঙালিকে ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি।”
অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের অনুমোদন নিয়েই অঞ্জনিপুত্র সেনা মিছিলের আয়োজন করে। তাতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সেই মিছিল থেকে বিরোধীদের কার্যত হুঙ্কার দিলেন তিনি। অনেক জায়গার মতো হাওড়াতেও রামনবমীর মিছিল হয় এবং তাতে যোগ দিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। গতবার এই অঞ্চলে মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনেই তিনি বলেন, ”গতবার যারা পাথর মেরেছিল, এবার তাদের বুকের ওপর দিয়ে হেঁটে আমরা রামনবমী করেছি। আমাদের যারা বাধা দেবে তাদের উচিত শিক্ষা এভাবেই দেওয়া হবে।”
এবার তৃণমূলকেও রামনবমী পালন করতে দেখা গেছে। কুণাল ঘোষ থেকে শুরু করে শওকত মোল্লা মিছিলে হেঁটেছেন। সেই প্রসঙ্গে সুকান্তর কটাক্ষ, ”ভোটব্যাঙ্কের জন্য রামনবমী পালন করতে হচ্ছে শাসক শিবিরকে। এমনি সময় তো জয় শ্রীরাম স্লোগানে তাঁদের সমস্যা হয়। তবে আমরা শুরু থেকেই হিন্দু এবং রামনবমী পালন করে আসছে।” সুকান্ত অবশ্য পুলিশের ওপর বিশেষ ভরসা রাখতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুলিশ আমাদের থামাতে চায়। অথচ আমরা দেশের আইন মেনেই চলি। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই মিছিল হচ্ছে। তবুও অনেক জায়গায় পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করেছে তাঁদের।”