সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“বাংলায় একটি নতুনত্ব যা হাজার হাজার বছর ধরে থাকবে।” দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “এটা নতুন কর্মক্ষেত্রে, ধর্মক্ষেত্র এবং বিশেষ করে মন্দিরকে অনেক বাজার গড়ে উঠবে। অনেক মানুষ কর্মক্ষেত্রে জড়িত হবে। পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন সংযোজন হবে।”
পুরীর আদলে এবার জগন্নাথ মন্দির দীঘায়। ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, বুধবার প্রস্তুতি বৈঠক হয়ে গেল নবান্নে। বৈঠকে শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জগন্নাথ ধাম আমার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল। যেহেতু সমুদ্রের ধারে, পুরীতে জগন্নাথদেবের মন্দির ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি। বাংলায় একটি নতুনত্ব যা হাজার হাজার বছর ধরে থাকবে। বাংলার মানুষ-সহ, দেশের মানুষ-সহ সারা পৃথিবীর মানুষ এটাকে তীর্থস্থান এবং ধর্মস্থান হিসেবে.. দিঘাতে এমনিতেই পর্যটনকেন্দ্র আছে।” মমতা বলেন, “ঠিক পুরীর মতোই সমুদ্রের পাশে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন। মন্দির ঘিরে রুজি রোজগার বাড়বে। দিঘাই এখন নতুন কর্মক্ষেত্র, ধর্মক্ষেত্র। পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন সংযোজন।” অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যতিথিতে মন্দির উদ্বোধন। তবে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। আগামী ২৮ এপ্রিল দিঘা আমন্ত্রিতদের পৌঁছনোর আর্জি জানান মমতা। পরদিন যজ্ঞ। ৩০ এপ্রিল প্রাণপ্রতিষ্ঠা এবং মন্দিরের দ্বারোদঘাটন। তারপর ইসকনের হাতে মন্দিরের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।
২৯ এপ্রিল যজ্ঞ হবে দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরে। এরপর ৩০ এপ্রিল বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠা ও মন্দির উদ্বোধন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৩ এয়ার কন্ডিশন হ্যাংকার থাকবে। হ্যাঙ্গার নম্বর ১ ক্যাপাসিটি ৬ হাজার জন। উদ্বোধনের মূল মঞ্চ এখানে থাকবে। এটা ৩০ তারিখের অনুষ্ঠানের জন্য। সেদিন সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান করছি। জিত্ গঙ্গোপাধ্যায়, ইলোরা বন্দ্যোপাধ্যায় অদিতি মুন্সি এবং ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। যাঁরা যেতে চান, ২৮ তারিখ দুপুরের মধ্যে চলে যাবেন। শিল্পপতিদের জন্য আমাদের কনভেনশন সেন্টারে জায়গা রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল ক্যাম্পও থাকবে। আর কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স, যদি প্রয়োজন হয়।”

জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের সময় কয়েক হাজার পুণ্যার্থী দিঘায় ভিড় জমাতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক মমতা। এদিনের বৈঠকে মহাকুম্ভে অব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মহাকুম্ভে অনেক লোক মারা গিয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। নোডাল অফিসাররা নজর রাখুন। ভালোভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে। একটা মানুষেরও যেন সমস্যা না হয়, দেখে নেবেন। প্ল্যানিং ঠিকমতো করতে হয়। ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত যা হয়েছে,আমরা চাইলে যেমন মহাকুম্ভের মেলা হয়েছে, প্রচুর হাইপ করে করতে পারতাম। আমরা কিন্তু সেটা করিনি। ওদের ওখানে জায়গাটা বড় আছে। দিঘায় কিন্তু জায়গাটা ছোট। মন্দিরে জায়গাটা অনেকটা বড়। মন্দির খুব বড় করে তৈরি হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটাই খুব বড় নয়। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হাইপ করে ডেকে আনব। তারপর তারা কোথায় থাকবে, তারা কোথায় যাবে, তাঁর সুনির্দিষ্ট বন্দোবস্ত করার জন্য প্রতিটি ব্লকে ব্লকে এলইডি টিভি লাগাচ্ছি। যাতে সারা বাংলা জুড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে মানুষ দেখতে পায়।”