কনিষ্ক সামন্ত। কলকাতা সারাদিন।
“২০২৬ সালের এরাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে নন্দীগ্রামে হিন্দুদের উপর হামলাকারী জিহাদিদের উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করে সুমধুর বদলা নেব।” এভাবেই রামনবমীর দিন নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার পবিত্র রামনবমীর দিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এলাকা পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের সোনাচুড়ায় ঐতিহ্যবাহী রাম জন্মভূমির আদলে নির্মিত হতে চলা রামমন্দিরের শিলান্যাস হল। তার আগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী নিজে। পরে মন্দিরের ভূমিপূজন ও শিলান্যাস হয়। শুভেন্দু অধিকারীর পূর্বের ঘোষণা মতই ‘শিলান্যাস করেন নন্দীগ্রামের প্রথম হিন্দু শহীদ স্বর্গীয় দেবব্রত মাইতি’র স্ত্রী কল্পনা মাইতি।
অনুষ্ঠান মঞ্চে বিরোধী দলনেতা বলেন, “২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নন্দীগ্রামে যখন বজরংবলীর পুজো হয়, এই সোনাচূড়া থেকে চারটি বাসে করে মায়েরা দিদিরা এবং প্রবীণ লোকেরা ধর্ম পালনের জন্য নন্দীগ্রাম যাচ্ছিল। তাদের ওপরে গড়চক্রবেড়িয়া এবং ভূতার মোড়ে জিহাদি হামলা হয় এবং ৪৫ জন আহত হয়। আপনারা দয়া করে এগুলো ভুলে যাবেন না। আমি ভুলে যাইনি। যেদিন পশ্চিমবঙ্গের এই শাসকের বদল হবে সেদিন প্রতিটি মামলা খুলে খুলে কিভাবে জিহাদীতে উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করতে হয় উত্তরপ্রদেশের মত সেটা আমরা করে দেখাবো। আপনারা নরেন্দ্র মোদির উপর ভরসা রাখবেন। শিখ দাঙ্গা মামলা পুনরায় খুলে সজ্জন কুমারদের শাস্তি দিয়েছেন। তাই নন্দীগ্রামে যেভাবে বারবার জিহাদীদের আক্রমণ হয়েছে, যেভাবে রথীবালা আড়ি, দেবব্রত মাইতি শহীদ হয়েছেন তার সুন্দর আইনি পথে সুমধুর বদলা আমরা নেব।”
পাশাপাশি তিনি জানান যে প্রস্তাবিত রামমন্দিরের প্রবেশ ও প্রস্থান ভবনসহ মন্দিরের বিভিন্ন অংশের নামকরণ ‘হিন্দু শহীদ’দের নামে হবে। এখানে চার বিঘা জমির উপরে অযোধ্যার ফৈজাবাদের রাম মন্দিরের আদলে নির্মাণ কার্য শুরু করব। ইতিমধ্যেই সাইট প্ল্যান তৈরি হয়ে গেছে। নন স্টপ কাজ হবে। আপনারা চোখের সামনে দেখতে পাবেন। জায়গা ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। কোন সরকারি টাকায় এই মন্দির নির্মাণ হবে না। আমি নিজের দায়িত্ব নিয়ে হিন্দুদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে এই মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব নিলাম।” তিনি বলেন, শুধু মন্দির নয়। মন্দির সংলগ্ন অতিথি শালা, গোশালা, ভোগশালা থাকবে। গোমাতার সেবা হবে। এখানে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার একটা ইউনিট হবে। যেটা স্বামী বিবেকানন্দ শিখিয়ে দিয়ে গেছেন যে স্বাস্থ্য শিক্ষা মানব সেবাই আসল কাজ।
কিন্তু অত বিপুল অঙ্কের অর্থ কি সাধারণ মানুষের দানের টাকায় সম্ভব? উত্তরে বিরোধী দলনেতা বলেন, “এখানকার লোকদেরকে টাকা দিতে হবে না। তাদের অবস্থা ভালো না। মন্দির করার জন্য লোক তৈরি। ১০ টা লোক আসবে এবং টাকা দিয়ে চলে যাবে।” ফের একবার তিনি শুনিয়ে দেন যে দীঘাতে সরকারি টাকায় মন্দির নয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করছে তৃণমূল সরকার।
জাতি গননা শুধু হিন্দুদের জন্য কেন? এই প্রশ্নও তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “শুধু আমাদের জাতি গননা হবে কেন? অন্যের জাতি গননা করেন না কেন? ওদের মধ্যে তো শিয়া-সুন্নি আছে।” এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনি বলেন কেন হিন্দিভাষী বিজেপি ? ওদের মধ্যেও তো উর্দুকে বলে বাংলায় বলে। বলেন না তো একবারও যে উর্দুভাষী মুসলমান এবং বাংলাভাষী মুসলমান? ২১ টা রাজ্যে বিজেপি আছে। দিল্লি পেয়েছি। এখানেও নেব। সব হিন্দু এক জোট হয়ে গেছে।”
সেই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী ঘোষনা করেন, “জালি হিন্দু’দের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ এপ্রিল কাঁথিতে ১ লক্ষ হিন্দু সমাবেশ হচ্ছে। সকাল ১০ টা থেকে হোম যজ্ঞের আয়োজন করা হবে এবং দুপুরে অন্নভোগেরও ব্যবস্থা থাকবে।”