সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
‘২৭ অগাস্টের নবান্ন অভিযান সম্পূর্ন বেআইনি।’ এই অভিযানের জন্য আইনত কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানাল কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা জানান, নবান্ন একটি সংরক্ষিত এলাকা। এখানে কোনও কর্মসূচি করতে গেলে অনুমতি নিতে হয়। তবে, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নাম দিয়ে যে সংগঠন অভিযান করার ডাক দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কোনওরকম অনুমতি নেয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
এমনকী, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে কোনও আইনি স্বীকৃত সংগঠনই নেই বলে দাবি করা হয় পুলিশের তরফে। বিষয়টি নিয়ে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন,’ পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’ নামে একটি সংগঠন এই অভিযানের ডাক দিয়েছে। কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে কোনও সংগঠনই নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এই নামে কোনও সংগঠন নেই।’ পুলিশের দাবি, কিছু লোক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অশান্তি তৈরির জন্য এই অভিযানের ডাক দিয়েছে। এই সংগঠনের যে তিনজন সাংবাদিক করে অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন গতকাল রাতে শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে এক বিশেষ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন বলেও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আগামীকাল মিছিলের ভিড়ের মধ্যে কিছু দুষ্কৃতী মিশে যাবে। মিশিলে ঢুকে গিয়ে ঝামেলা বাঁধানোর চেষ্টা করবে। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ এসব করার চেষ্টা করবে।’ এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট আরজি কর কাণ্ড নিয়ে পুলিশকে কোনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দিতে না পারলেও, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
আগামীকাল, মঙ্গলবার ২৭ অগস্ট ইউজিসি নেট-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা রয়েছে। ছাত্র সমাজের নাম নিয়ে এই অভিযানের ডাক দেওয়া হলেও প্রচুর ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষার বিষয়টি কেন খেয়াল রাখা হল না? প্রশ্ন তোলা হয় পুলিশের তরফে। আদতে, ছাত্র ও মহিলাদের এই অভিযানের সামনে এগিয়ে দিয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে ইউ ‘বেআইনি’ অভিযানের নামে বলেই দাবি পুলিশের।
পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়, এই আন্দোলন হাওড়ার যে কোনও জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে করার ব্যাপারে পুলিশের তরফে ওই সংগঠনকে জানানো হয়েছিল। সে ব্যাপারেও কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি। যে কোনও মিছিল-মিটিং বা রাজনৈতিক কমর্সূচি করতে গেলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনে নেতৃত্বকে কোথায় মিছিল হবে, কতো লোক জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা, কোন পথ দিয়ে মিছিলে লোক আসবেন, এই সংক্রন্ত যাবতীয় তথ্য দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু, সেক্ষেত্রে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেই দাবি পুলিশের।