বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
‘আইসি ৮১৪: দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক’ ওয়েব সিরিজে জঙ্গিদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন পরিচালক অনুভব সিনহা। এমন অভিযোগে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। ইতিমধ্যেই ওয়েব সিরিজ বয়কটের দাবি তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। পরিচালককে কটাক্ষে বিঁধছেন অনেকেই। কিন্তু কেন?
১৯৯৯ সালে কাঠমাণ্ডু থেকে দিল্লিগামী আইসি ৮১৪ বিমান হাইজ্যাক করে জঙ্গিরা। অমৃতসর, লাহৌর ঘুরে বিমান নিয়ে যাওয়া হয় আফগানিস্তানের কান্দাহারে। পণবন্দী করা হয় প্রায় ১৭৫ যাত্রীকে। ভারতের জেল থেকে কুখ্যাত জঙ্গিদের মুক্তি দিলে তবেই যাত্রীদের ছাড়া হবে বলে জানান হাইজ্যাকাররা। তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে।
সেই ঘটনা অবলম্বনেই ‘আইসি ৮১৪: দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক’ তৈরি করেছেন পরিচালক অনুভব সিনহা। কিন্তু গোল বেঁধেছে হাইজ্যাকারদের নাম নিয়ে। হাইজ্যাকের ঘটনায় ৬ জঙ্গির নাম সামনে এসেছিল। তারা হল ইব্রাহিম আতহার, শহীদ আখতার সাঈদ, সানি, আহমেদ কাজি, জহুর মিস্ত্রি এবং শাকির। ওয়েব সিরিজে এদের নাম দেওয়া হয়েছে ভোলা, শঙ্কর, ডাক্তার, বার্গার এবং চিফ।
এই নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক। নেটিজেনদের একাংশ বলছেন, পরিচালক অনুভব সিনহা ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছেন। নাম বদলে জঙ্গিদের আসল পরিচয় গোপনের চেষ্টা করা হয়েছে। তাই এই ওয়েব সিরিজ বয়কট করা উচিত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়কট ক্যাম্পেন শুরু হতেই সামনে এসেছেন কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবরা। তাঁর দাবি, হাইজ্যাকাররা নিজেদের পরিচয় গোপন করতে এই নামগুলোই ব্যবহার করেছিল। তাই ওয়েব সিরিজেও তা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, ওয়েব সিরিজ তৈরির আগে এই নিয়ে অনেক গবেষণা করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। সিরিজ নির্মাতাদের দাবি, হাইজ্যাক বিমানে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, জঙ্গিরা পরস্পরকে ওই সমস্ত নামেই ডাকছিলেন৷ সেই কারণেই সেই নামগুলি ঘটনার প্রকৃত বিবরণ মেনেই রাখা হয়েছে৷
এত ব্যাখ্যার পরেও অবশ্য বিতর্ক থামেনি। এক ইউজার লিখেছেন, ‘পরিচালক ইচ্ছাকৃতভাবে সত্য বিকৃত করেছেন। নতুন করে ইতিহাস লেখার চেষ্টা চলছে’। অনেকে আবার এই ওয়েব সিরিজকে প্রোপাগান্ডা আখ্যা দিয়েছেন। এই ইউজারের বক্তব্য, ‘আইসি ৮১৪ ট্রাজেডিকে হাস্যকর গল্পে পরিণত করে সিনহা দেখিয়ে দিলেন তাঁর টিকি কোথায় বাঁধা রয়েছে। ভুক্তভোগী বা সত্যের প্রতি তিনি দায়বদ্ধ নন’।