শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“তৃণমূলের মধ্যে কোনও অনুতাপ নেই। না হলে মুখ্যমন্ত্রী কখনও বলেন, টাকার কথা? একজন ধর্ষিতা মৃতা তরুণীর দাম ১০ লক্ষ টাকা?” আরজি কর কাণ্ডের সেই বিষয় আরও একবার তুলে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম ভূমি রক্ষা আন্দোলনে নিশিকান্ত মন্ডল মারা গিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যু দিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে উপস্থিত হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোনাচূড়ায় তাঁর পূর্ণাবয়ব মুর্তিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘয নিবেদন করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এখানে অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে আরজিকর প্রসঙ্গ তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
“এই দলটিকে নির্বাচন কমিশনের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত। তৃণমূলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে, দুর্নীতি, খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ কখনও বন্ধ হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতক্ষণ থাকবেন কোন এই যন্ত্রণা মানুষকে বইতে হবে।” কটাক্ষ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
দিল্লির নিম্ন আদালতে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল জামিন পেয়েছেন। তাই নিয়ে যথেষ্ট চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। এবার সেই বিষয়ে খোঁচা দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একাধিক অভিযোগ রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। উচ্চ আদালতে মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ববি হাকিমকে বার্তা দিয়েছেন অনুব্রত মন্ডলকে দলের কাজে নামাতে। এমনই কথা জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর কটাক্ষ করে বলেছেন, “এদের কোনও লাজলজ্জা আছে? নিম্ন আদালতের পরে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট আছে। সেখানে যদি এজেন্সি জামিন না কোচের আবেদন করে, কোথায় যাবেন? মহম্মদ বাজারে জিলেটিন স্টিকের কেস এনআইএর হাতে। তাতে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। বড় ঠিকাদার ইসলামের নাম রয়েছে। নলহাটির এমএলএর নাম রয়েছে। বিকাশ রায়চৌধুরীর নাম রয়েছে। অনুব্রত মন্ডলের নাম রয়েছে।” রবিবার বলেন শুভেন্দু অধিকারী।
বন্যা পরিস্থিতি দেখতে শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়াতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে সামনে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। শুভেন্দুর কাছে তিনি জানিয়েছিলেন, বন্যার জলে ভেঙে পড়েছে তাঁরয় বাড়ি। অসহায় সেই বাসিন্দাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বিরোধী দলনেতা আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্য করবেন। ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই সাহায্য পৌঁছে গেল ভাঙা বাড়ির মালিকের কাছে। চেক হাতে পেয়ে কেঁদে ফেললেন তিনি।
অন্যদিকে, আজ রবিবার কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত উত্তরণ ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ‘বেঙ্গলি বাজার’-এর সামনে একটা সাইনবোর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । ওই সাইনবোর্ডের লেখা আছে ইংরাজি ও উর্দু ভাষায়। নামে ‘বেঙ্গলি বাজার’ হলেও সাইনবোর্ডে বাংলার ছিঁটেফোঁটাও নেই । এই দেখে শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছেন,পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক বাংলার মানুষকে উর্দুভাষী বানানোর চেষ্টা করছেন পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । শুভেন্দু লিখেছে,’কলকাতার মহানাগরিক জনাব ফিরহাদ হাকিম সাহেব কি নিজের পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক বাংলার অর্ধেক নাগরিকদের উর্দুভাষী বানানোর প্রচেষ্টা কলকাতা পুরসভার মাধ্যমেই শুরু করে দিলেন? নয়তো “বাঙালি বাজার” সাইন বোর্ডে বাংলা ভাষাই ব্রাত্য আর উর্দু জ্বলজ্বল করছে, এটা মনে হয় মেয়র সাহেবের নির্দেশ ছাড়া সম্ভব নয়। বলছি সাইন বোর্ড, ব্যানার, হোর্ডিং গুলোতে বাংলা কে প্রাধান্য দিন ফিরহাদ হাকিম সাহেব, পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী ৯০ শতাংশ মানুষ বাংলাতেই স্বচ্ছন্দবোধ করেন। আপনি বরং আপনার পছন্দের ধর্মীয় সভায়, যেখানে আপনি মানুষের জন্মগ্রহণের সূত্রে ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকেন, সেখানে উর্দু ভাষাকে বেশি প্রাধান্য দিন।’