সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আবাস যোজনার সমীক্ষা শুরু হতে না হতেই আরো একবার শিরোনামে তৃণমূলের বিধায়কের বিরুদ্ধে কেলেঙ্কারির অভিযোগ।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র প্রভাবে গত সপ্তাহে উপকূলবর্তী অঞ্চলে কোথায় কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরাও দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল-সহ অন্য আধিকারিকেরা।
কিন্তু বৈঠক শুরুর আগেই বিপত্তি। গোসাবার বিডিও অফিসে বৈঠকের কথা ছিল। দুপুর ১২টা নাগাদ মন্ত্রী বিডিও অফিসের সামনে পৌঁছতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকাবাসীরা। অভিযোগ মূলত গোসাবার বিধায়কের বিরুদ্ধে। বিক্ষুদ্ধদের অভিযোগ, বিধায়ক এলাকার স্থানীয় মানুষজনদের থেকে টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু পরে সেই টাকা ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। কবে তাঁরা টাকা ফেরত পাবেন, সেই প্রশ্ন তুলে মন্ত্রী, বিধায়কের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসীরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা তৃণমূলেরই সমর্থক। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা বলেন। তাঁদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন। আশ্বাস দেন এই বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে আনবেন। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আজ সরকারি কর্মসূচিতে এসেছি। যদি আপনারা চান, আমি এখান থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঘটনার কথা জানাব।’
কিন্তু সেই আশ্বাসে দৃশ্যত সন্তুষ্ট হননি বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা। কবে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে তাঁরা বিধায়কের থেকে তৎক্ষণাৎ উত্তর চাইতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের হই হট্টগোলের মাঝে ক্ষণিকের জন্য দৃশ্যত রেগেও যেতে দেখা যায় মন্ত্রীকে। কিছুটা ধমক দিয়েই বলেন, ‘একটিও বাজে কথা যদি কেউ বলেন, তাঁর রেহাই নেই। আমি মন্ত্রী হিসাবে এখানে এসেছি।’
পরে বিডিও অফিসের ভিতরে তাঁরা প্রবেশ করার সময়েই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসীরা। বিধায়ক সুব্রতকে বিভিন্ন ধরনের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। লোকসভা ভোটের সময় বিধায়ক কোথায় ছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এলাকাবাসীরা। আড়ালে আবডালে বিধায়ক তাঁর অনুগামীদের দিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠে আসে।
বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে ভেসে আসে, ‘বিজেপির এমএলএ!’ কেউ আবার বললেন, ‘আপনি বিধায়ক হওয়ার যোগ্য নন।’
ভিক্ষুক কারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কে অভিযোগ জানান, “গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মন্ডল নিজের দ্বীপ বালি ১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত পারিবারিকভাবে নিজের দখলে রেখে দিয়েছেন। সেখানে আবাস যোজনার টাকা থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজের টাকা তুলছে নিজের পরিবার আর তৃণমূলের বুথ স্তরের নেতারা। যাদের মধ্যে রয়েছে গণপতি সাফুই, স্বদেশ মন্ডল থেকে শুরু করে বিধায়ক সুব্রত মন্ডল এর ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন।”
যদিও পরে এ বিষয়ে গোসাবার বিধায়কের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে। চক্রান্ত করা হয়েছে।’