সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়েকে কু-কথা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া সিবিআই তদন্তের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল। আরজি কর -কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিল থেকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাবালিকা কন্যাকে উদ্দেশ্য করে কুকথা বলা হয়েছিল। এই ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃত দুই জনকে কলকাতা পুলিশ ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপরই এই মামলায় কলকাতা হইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মমলাতেই স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়ার ডিভিশন বে়ঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। সেখানে সিবিআই তদন্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিল থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাবালিকা মেয়েকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়ার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়টিকেই সামনে রেখে অভিষেকের মেয়ে সম্পর্কে মিছিলে যোগদানকারীরা অশালীন কথা বলে বলে অভিযোগ। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডায়মন্ড হারবার থানায় দুই তরুণীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর নিমতা থেকে দুই তরুণীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপরই ধৃতরা পুলিশের অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। কলকাতা হইকোর্টের সিঙ্গেল ও ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
ওই মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশের উপর সোমবার অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রথমে হাই কোর্টের একক বেঞ্চ, পরে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ— উভয় এজলাসেই সিবিআই তদন্তের পক্ষেই রায় দেওয়া হয়েছিল। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। সোমবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূয়ানের বে়ঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। সেখানে সিবিআই তদন্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। মামলাটি প্রথমে উঠেছিল হাই কোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চে। পুলিশের উপর অনাস্থার কথা জানিয়ে ওই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের উপর দিয়েছিলেন তিনি। বিচারপতি বলেছিলেন, ‘যে ভাবে হেফাজতে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে, তাতে পুলিশের উপর আদালতের আর ভরসা নেই। তাই ওই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হোক।”
পরে মামলাটি যায় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেও একক বেঞ্চের নির্দেশই বহাল থাকে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানিয়েছিল, মামলাকারীর উপর শারীরিক নির্যাতনের স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে মেডিক্যাল রিপোর্টে। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও সিবিআই তদন্তের নির্দেশই বহাল রেখেছিল।